মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা। মুমিনরা একত্রিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করার মাধ্যমে উৎসব উদযাপন করেন। ঈদের নামাজ আদায় করা ওয়াজিব।
ঈদের নামাজ উন্মুক্ত স্থানথে(মাঠে) আদায় করা সুন্নাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করতেন। যদি উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা না থাকে তবে মসজিদেও ঈদের নামাজ পড়া যাবে।
ঈদের নামাজ :
ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুম’আর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে(সবাই যেনও স্পষ্টভাবে শুনতে পারে ) কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়
ঈদের নামাজের পার্থক্য :
ঈদের নামাজের জন্য পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ছয় (৬)টি তাকবির দিতে হবে। (১ম) প্রথম রাকা’আতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত (০৩)তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পাঠ করা । দ্বিতীয় রাকা’আতে সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত (০৩)তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।
নামাজের নিয়ত (আরবিতে):
নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকয়াতাই সালাতি ঈদিল ফিতর, মায়া ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তায়ালা ইকতাদাইতু বিহাযাল ইমাম, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
অর্থ (বাংলায়):
ঈদের দুই রাকা’আত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত (০৬) তাকবিরের সঙ্গে সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি… আল্লাহু আকবার।
(১ম) প্রথম রাকাআত:
ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা। ছানা পড়া- ‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা।
অতিরক্তি (০৩) তিন তাকবির দেয়া। (০১)এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে (০৩)তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। (০১)প্রথম ও (২য়) দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং (৩য়)তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া।
আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পাঠ করা। সুরা ফাতেহা পাঠ করা। সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে (১ম) প্রথম রাকা’আত শেষ করা।
(২য়) দ্বিতীয় রাকা’আত
- বিসমিল্লাহ পাঠ করা
- সুরা ফাতেহা পাঠ করা
- সুরা মিলানো।
- সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত (০৩) তিন তাকবির দেয়া। (১ম) প্রথম রাকাআতের মতো (২য়) দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর (৩য়)তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা।
- রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া।
- সেজদা আদায় করে তাশাহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।
খুতবা শুনা:
ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম সাহেব খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগ সহকারে শুনবে। অনেকেই খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাব সহ অনেকেই প্রথম রাকা’আতে তাকবিরে তাহরিমা সহ (০৭) সাত তাকবির আর দ্বিতীয় রাকা’আতে (০৫) পাঁচ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।
আল্লাহ তা’আলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ঈদের নামাজ আদায়ে যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রেখে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ্ সকলকে মাফ করে দেন । আমিন