বাংলা ভাষায় “খর” শব্দটির অর্থ অনেক। এটি বিশেষণ ও বিশেষ্য দুই ভাবে ব্যবহৃত হয়। “খর” শব্দটি ব্যবহারের উপর নির্ভর করে এর অর্থ পরিবর্তন হতে পারে। আমরা এখানে “খর” শব্দের বিভিন্ন অর্থ এবং ব্যবহার বিশ্লেষণ করব।
“খর” শব্দের অর্থ এবং ব্যবহার
বিশেষণ হিসেবে
- ধারালো: “খর অসি” – এই উদাহরণে, “খর” শব্দটি “ধারালো” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- প্রবল: “ধু ধু চৈত্রের খর দাহনের দিনে-রখা” – এখানে “খর” শব্দটি “প্রবল” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- তীব্রগতি: “খরস্রোতা” – “খর” শব্দটি এখানে “তীব্রগতি” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- কর্কশ: “খর বচন” – এখানে “খর” শব্দটি “কর্কশ” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- উগ্র: “খর ঝাল” – “খর” শব্দটি এখানে “উগ্র” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- প্রখর: “খর রৌদ্র” – এখানে “খর” শব্দটি “প্রখর” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
- ধাতব পদার্থ মিশ্রিত: “খর পানি” – “খর” শব্দটি এখানে “ধাতব পদার্থ মিশ্রিত” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
বিশেষ্য হিসেবে
- গর্দভ: “খর” শব্দটি একটি বিশেষ্য শব্দ হিসেবে “গর্দভ” অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে।
- রাক্ষসবিশেষ: “খর” শব্দটি “রাবণের বৈমাত্রেয় ভ্রাতা” অর্থে ব্যবহৃত হয়।
“খর” শব্দ সম্পর্কিত অন্যান্য শব্দ
- খরকর: তীব্র কিরণ, প্রখর তেজ।
- খরখরে: কর্কশ, তীক্ষ্ণস্পর্শ, অমসৃণ, চালাক, চটপটে, অতিরিক্ত ভাজা।
- খরখরে বুদ্ধি: তীক্ষ্ণ বুদ্ধি, প্রখর বুদ্ধি, সজাগ বুদ্ধি।
- খর জল, খর পানি: লবণ, ক্ষার প্রভৃতি ধাতব পদার্থযুক্ত পানি, hard water.
- খরজালি: রৌদ্রতাপে পানি শুষ্ক করে প্রস্তুত লবণ।
- খরতর: তীক্ষ্ণতর, অত্যন্ত প্রখর।
- খরধার, খরশান: খুব ধারালো, তীক্ষ্ণ ধারবিশিষ্ট।
- খরপোড়া: বেশি পোড়া।
- খরশাণ, খরশান, খরসান: তীক্ষ্ণ শানযুক্ত, খুব ধারালো।
- খর স্রোত, খর স্রোতঃ: প্রবল স্রোত, অত্যন্ত বেগবান প্রবাহ।
সমার্থক শব্দ
- ধারালো
- তীক্ষ্ণ
- প্রবল
- তীব্র
- কর্কশ
- রুক্ষ
- উগ্র
- প্রখর
- প্রচণ্ড
- ধাতব
- গর্দভ
- খচ্চর
- অশ্বতর
- রাক্ষস
“খর” শব্দটি ব্যবহার করে অনেক প্রবাদ-প্রবচন ও গানের ছড়া আছে।
উদাহরণস্বরূপ, “খরের বুদ্ধি” অর্থে তীক্ষ্ণ বুদ্ধি বোঝায়। আবার “খর পানি” অর্থে লবণ মিশ্রিত পানি বোঝায়।
এই উদাহরণগুলো বোঝা যায় যে “খর” শব্দটি অনেক বিভিন্ন অর্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হয় এবং এটি বাংলা ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ।