‘কৈছন’! শুনতে একটু অচেনা লাগছে, তাই না? এই শব্দটি আসলে আমাদের বাংলা ভাষারই এক অমূল্য সম্পদ। এক সময় এই শব্দটি দিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করতেন। আজ আমরা এই ব্লগপোস্টের মাধ্যমে জেনে নেব ‘কৈছন’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং আরও অনেক কিছু।
কৈছন শব্দের অর্থ কি?
‘কৈছন’ শব্দটি মূলত একটি বিশেষণ পদ। এর অর্থ হলো “কেমন” বা “কিরূপ”। অর্থাৎ কোনো কিছুর ধরণ, প্রকৃতি বা অবস্থা বোঝাতে ‘কৈছন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
কৈছন শব্দের উৎপত্তি
‘কৈছন’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে সংস্কৃত ‘কীদৃশ’ শব্দ থেকে। ধারাবাহিকভাবে ‘কীদৃশ’>‘কইস’>‘কৈছন’ -এইভাবে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে।
কৈছন শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কৈছন’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- কেমন
- কিরূপ
- কী ধরণের
- কী প্রকারের
কৈছন শব্দের ব্যবহার
আধুনিক বাংলায় ‘কৈছন’ শব্দটির প্রচলন প্রায় নেই বললেই চলে। তবে একসময় বাংলা সাহিত্যে, বিশেষ করে মধ্যযুগীয় কাব্যে এর ব্যাপক ব্যবহার ছিল। বিদ্যাপতির পদাবলীতে আমরা ‘কৈছন’ শব্দটির ব্যবহার দেখতে পাই।
উদাহরণ:
- “কৈছনে যায়ব-(বিদ্যাপতি)” (অর্থ: কিভাবে যাবো)
- “কৈছে গোঙায়ব হরি বিনু দিন রাতিয়া-(বিদ্যাপতি)” (অর্থ: কিভাবে গান গাইবো হরি ছাড়া দিন ও রাত )
এ ছাড়াও, আঞ্চলিক ভাষায় এখনও ‘কৈছন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
কৈছন শব্দ ব্যবহারে সাবধানতা
‘কৈছন’ শব্দটি আধুনিক বাংলায় অপ্রচলিত। তাই এই শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, ‘কৈছন’ শব্দটি বাংলা ভাষার একটি অমূল্য ঐতিহ্য। এই ধরনের শব্দ আমাদের ভাষাকে সমৃদ্ধ করে।