“কেউটে” শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলে, লোকমুখে প্রচলিত নানান গল্পে, ছড়ায়, এমনকি গানেও এই শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন এই শব্দটির অর্থ কী বা কোথা থেকে এসেছে এর উৎপত্তি?
কেউটে শব্দের অর্থ
বাংলা ভাষায় “কেউটে” বলে মূলত এক প্রজাতির অত্যন্ত বিষধর সাপকে বোঝায়। এই সাপ cobra নামেও পরিচিত। কেউটে সাপের ফণা এবং তাতে থাকা চশমার আকৃতির নকশার জন্য সহজেই এদের আলাদা করা যায়।
কেউটে শব্দের উৎপত্তি
“কেউটে” শব্দটির উৎপত্তি সম্পর্কে ভাষাবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ থাকলেও, সাধারণভাবে ধরা হয় এটি সংস্কৃত শব্দ “কৃষ্ণটিকা” থেকে এসেছে। “কৃষ্ণটিকা” শব্দের অর্থ “যার মাথায় কালো টিকা আছে”। কেউটে সাপের মাথায় যে চশমার আকৃতির নকশা থাকে, তাকে ইঙ্গিত করেই এই নামকরণ। পরবর্তীতে “কৃষ্ণটিকা” শব্দ থেকে ধ্বনিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে “কেউটে” শব্দের উদ্ভব হয়।
কেউটে শব্দের সমার্থক শব্দ
“কেউটে” শব্দের কিছু অন্যতম সমার্থক শব্দ হলো:
- কেউটিয়া
- গোখরা
- কালসাপ
- নಾಗ
- ফণী
কেউটে শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্য এবং লোক সংস্কৃতিতে “কেউটে” শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। উদাহরণস্বরূপ:
- “কেউটের বিষ ধারণ করে কে?”- এখানে “কেউটে” শব্দটি ব্যবহার করে একটি গভীর প্রশ্ন করা হয়েছে।
- “কেউটে যেমন ফণা তোলে, তেমনি তুমিও রাগ দেখাচ্ছো কেন?”- এখানে “কেউটে” শব্দটি ব্যবহার করে একটি তুলনা করা হয়েছে।
উচ্চারণ এবং পদের নাম
বাংলা: কেউটে
ইংরেজি: Cobra
পদের নাম: বিশেষ্য
প্রবাদ-প্রবচন
“কেউটের কাছে যায় না কেউ, বিষের ভয়ে সবে ডরে।”- এই প্রবাদটি বলে যে বিপদ জেনেও কেউ বিপদের কাছে যায় না।
পরিশেষে বলা যায় যে, “কেউটে” শুধু একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।