‘কুশীলব’ শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। নাটক, সিনেমা, থিয়েটার, গান – এসবের সাথে জড়িত মানুষদের ‘কুশীলব’ বলে সম্বোধন করা হয়। কিন্তু শব্দটির গভীরে আরও অনেক অর্থ লুকিয়ে আছে। আজ আমরা জানবো ‘কুশীলব’ শব্দের আদি অর্থ, ব্যবহার, এবং এ শব্দ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য।
কুশীলব শব্দের অর্থ কি?
‘কুশীলব’ একটি সংস্কৃত শব্দ। এটি ‘কুশ’ এবং ‘লব’ এই দুটি শব্দের দ্বন্দ্ব সমাস। রামায়ণের পরিচিত চরিত্র রামচন্দ্রের দুই পুত্রের নাম ক্রমে ‘কুশ’ এবং ‘লব’। সুতরাং ‘কুশীলব’ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘কুশ ও লব’।
তবে কালক্রমে ‘কুশীলব’ শব্দটির অর্থ ব্যাপকতা লাভ করেছে। বর্তমানে এই শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়:
- নাট্যশিল্পী: নাটকের পাত্রপাত্রীদেরকে ‘কুশীলব’ বলা হয়। এটি ‘কুশীলব’ শব্দের সবচেয়ে প্রচলিত অর্থ।
- গায়ক: যারা গান করে তাদেরকেও ‘কুশীলব’ বলা হয়। বিশেষ করে ভক্তিমূলক গানের ক্ষেত্রে এই অর্থটি ব্যবহৃত হয়।
- রামচন্দ্রের পুত্রদ্বয়: ‘কুশীলব’ শব্দটি দিয়ে সরাসরি রামচন্দ্রের পুত্র ‘কুশ’ এবং ‘লব’কেও বোঝানো হয়।
কুশীলব শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কুশীলব’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ রয়েছে, যেমন:
- অভিনেতা
- অভিনেত্রী
- নাট্যশিল্পী
- নট
- নটী
- গায়ক
- গায়িকা
- কণ্ঠশিল্পী
কুশীলব শব্দের ব্যবহার
‘কুশীলব’ শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হল:
- আজ থিয়েটারে “রক্তকরবী” নাটকের সকল কুশীলব চমৎকার অভিনয় করেছেন।
- ভজন সন্ধ্যায় আমন্ত্রিত কুশীলব তাঁর সুরেলা কণ্ঠে সকলকে মুগ্ধ করেছিলেন।
- রামায়ণ গ্রন্থে কুশীলবের জন্ম ও তাঁদের বীরত্বের কাহিনী বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে।
কুশীলব শব্দ সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন:
বাংলা ভাষায় ‘কুশীলব’ শব্দ সম্পর্কিত কোন প্রবাদ-প্রবচন প্রচলিত নেই।
উপসংহার:
‘কুশীলব’ শব্দটি শুধু একটি পেশাগত পরিচয়ের ইঙ্গিত ব্যক্ত না করে একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। এই শব্দের মাধ্যমে আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির গভীরতাকে আরও ভালোভাবে বুঝতে পারি।