“কুঁড়” একটি প্রাচীন বাংলা শব্দ যার বহুবিধ অর্থ এবং ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এই শব্দটি দিয়ে ছোট গর্ত, জলাশয়, আবার ধান ভানার যন্ত্রকেও বোঝানো হয়। এই পোস্টে আমরা “কুঁড়” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে সম্পর্কিত কিছু মজার তথ্য জানবো।
কুঁড় শব্দের অর্থ
“কুঁড়” শব্দটির প্রধানত তিনটি অর্থ পাওয়া যায়:
- গর্ত; জলাশয়: এই অর্থে “কুঁড়” শব্দটি মাটিতে করা ছোট গর্ত, অথবা ছোট জলাশয়কে বোঝায়।
- পেষণের ভাণ্ড: “কুঁড়” শব্দটি দিয়ে ধান ভানার জন্য ব্যবহৃত এক ধরণের যন্ত্রকে বোঝায়, যা দিয়ে ধান থেকে চাল আলাদা করা হয়।
- তুষের কণা: এটি “কুঁড়” শব্দের আরেকটি অর্থ, যা ধান ভানার পর যে ছোট ছোট তুষ থাকে, তাকে বোঝায়।
কুঁড় শব্দের ব্যবহার
কথ্য ভাষায় এবং সাহিত্যে “কুঁড়” শব্দটির ব্যবহার দেখা যায়।
- কথ্য ভাষায়: গ্রামীণ মানুষের মুখে মুখে “কুঁড়” শব্দটি শোনা যায়। যেমন: “ওইখানে একটা কুঁড় আছে, পানিতে ভরা।” অথবা, “ধান ভানার সময় কুঁড় থেকে চাল আলাদা করতে হয়।”
- সাহিত্যে: কবি ভারতচন্দ্র রায় তার “অন্নদামঙ্গল” কাব্যে লিখেছেন, “নূতন ঘোটনা কুঁড় দিয়াছে বিশাই।” এখানে “কুঁড়” শব্দটি ধান ভানার যন্ত্রকে বোঝাচ্ছে।
কুঁড় শব্দের উৎপত্তি
“কুঁড়” শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত “কুণ্ড” শব্দ থেকে।
- সংস্কৃত: কুণ্ড
- প্রাকৃত: কুংড
- বাংলা: কুঁড়
কুঁড় শব্দের সমার্থক শব্দ
“কুঁড়” শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- গর্ত
- খানা
- কুয়া
- পুকুর
- দিঘি
- ঢেঁকি
- ভাঁড়ার
কুঁড় শব্দ ব্যবহার করে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
“কুঁড়” শব্দ ব্যবহার করে বাংলায় বিশেষ কোন প্রবাদ-প্রবচন দেখা যায় না।
পরিশেষে বলা যায়, “কুঁড়” একটি সাবলীল এবং অর্থবহ বাংলা শব্দ যা আমাদের ভাষার ধনী ঐতিহ্যের প্রতিনিধিত্ব করে।