বসন্তের আগমনী বার্তা বয়ে আনে প্রকৃতির নবরূপ। শীতের শুষ্কতা কাটিয়ে ধরণীর বুকে যখন নতুন করে প্রাণের স্পন্দন ফিরে আসে, তখন তারই একটি অপরূপ প্রকাশ হলো নবরূপ। এই নতুন পাতার সৌন্দর্যকে, তার কোমল সবুজ আভা আর নবজীবনের প্রতীকী অর্থকে বাংলায় খুব সুন্দরভাবে বর্ণনা করা হয় “কিশলয়” শব্দটি দিয়ে।
কিশলয় শব্দের অর্থ
কিশলয় হলো একটি বিশেষ্য পদ, যা গাছের নতুন ও কচি পাতা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। বসন্তের আগমনে যখন গাছ নতুন নতুন পাতায় সজ্জিত হয়, তখন সেই কোমল, ফ্যাকাশে সবুজ পাতাগুলোকে বলা হয় “কিশলয়”।
কিশলয় শব্দের উৎপত্তি
কিশলয় শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ থেকে। এর উৎপত্তিগত ব্যুৎপত্তি হল:
- কিম্ + √শিল্/√সিল্ +অ(অচ্)+অয়/(কয়ন্)
যেখানে, “কিম্” অর্থ “কিছু” বা “কিঞ্চিৎ”, “শিল্/সিল্” অর্থ “আবৃত করা” বা “ঢাকা”। অর্থাৎ, যা কিছু ঢাকা বা আবৃত ছিল, তাই হলো কিশলয়।
কিশলয় শব্দের সমার্থক শব্দ
কিশলয় শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- নবপল্লব
- কুঁড়ি পাতা
- নতুন পাতা
- চারা পাতা
- কোরক
কিশলয় শব্দের ব্যবহার
কিশলয় শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। যেমন:
- সাহিত্য: কবিতা, গান, গল্প ইত্যাদিতে নতুনত্ব, প্রাণ, আশা ইত্যাদি প্রকাশ করতে কিশলয় শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
- দৈনন্দিন জীবন: আমরা নতুন কোনো কাজ শুরু করলে, নতুন কোনো অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলে, তখন “কিশলয়ের মতো নতুন” এই ধরনের বাক্য ব্যবহার করে থাকি।
- প্রকৃতি বর্ণনা: বসন্তকাল বর্ণনা করতে গিয়ে কিশলয় শব্দটি অনেক ব্যবহৃত হয়।
কিশলয় শব্দ সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- কিশলয় দেখলে কুঁড়ি মনে হয় না। অর্থাৎ অভিজ্ঞতার অভাবে ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা থাকে না।
সবশেষে বলা যায়, কিশলয় শুধু একটি শব্দ নয়, এটি প্রাণ, আশা, নব জীবনের প্রতীক। এটি আমাদের মনে করে দেয়, প্রতিটি শেষ একটি নতুন শুরুর ইঙ্গিত বয়ে আনে।