বাংলা ভাষা শব্দার্থের সমাহারে সমৃদ্ধ। প্রকৃতি, পরিবেশ, পশু-পাখির নামকরণেও বাংলা ভাষা তার স্বকীয়তা ধরে রেখেছে। আজ আমরা এমনই একটি পাখির নাম নিয়ে আলোচনা করবো, যার নাম “কানাকুয়া”। গ্রামবাংলার পরিচিত এই পাখিটি তার স্বতন্ত্র ধর্মের জন্য এবং কণ্ঠস্বরের জন্য সকলের কাছে পরিচিত।
কানাকুয়া শব্দের অর্থ কি?
“কানাকুয়া” হলো এক ধরনের পাখির নাম। এই পাখি প্রধানত বাংলাদেশ এবং ভারতের কিছু অঞ্চলে দেখা যায়। “কানাকুয়া” শব্দটি এসেছে তৎসম “কর্ণকূপ” শব্দ থেকে। “কর্ণ” অর্থ কান এবং “কূপ” অর্থ গর্ত বা খোঁচা। অর্থাৎ যার কানে গর্ত বা খাঁজ আছে সে হলো “কানাকুয়া”। এই পাখির কানের কাছে একটি সাদা ধব রেখা থাকে যা দেখতে গর্ত বা খাঁজের মতো।
কানাকুয়া শব্দের সমার্থক শব্দ
কানাকুয়া পাখিটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত। কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- কানাকুয়া
- কানাকুয়ো
- কর্ণকূপ
- শালিক (কিছু অঞ্চলে)
কানাকুয়া শব্দের ব্যবহার
কানাকুয়া শব্দটি প্রধানত পাখিটিকে চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়। তবে সাহিত্যে এবং রূপক অর্থে এই শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। উদাহরণ:
- সাহিত্যে: “কানাকুয়া ডাকবে শুধু পহরের পর পহর গনে।” – জসীমউদ্দীন
- রূপক অর্থে: “তার কথাগুলো আমার কাছে কানাকুয়ার ডাকের মতো শোনা যাচ্ছিল।” (অর্থাৎ তার কথাগুলো বোধগম্য হচ্ছিল না)
কানাকুয়া পাখি সম্পর্কে কিছু তথ্য:
- ইংরেজি নাম: Common Myna
- বৈজ্ঞানিক নাম: Acridotheres tristis
- വലിപ്പം: মাঝমধ্যম আকারের পাখি, প্রায় ২৫ সেন্টিমিটার দীর্ঘ
- রঙ: প্রধানত কালো রঙের পাখি, ปีก এবং লেজে সাদা ধব রেখা থাকে।
- খাদ্য: প্রধানত পোকামাকড়, फल এবং বীজ খায়।
- আবাসস্থল: গ্রাম, শহর, বন – সর্বত্র দেখা যায়। প্রধানত গাছের খোঁচা এবং ভবনের ফাঁকে বাসা বাঁধে।
পরিশেষে বলা যায়, “কানাকুয়া” শব্দটি শুধু একটি পাখির নাম নয়, বরং বাংলা ভাষা এবং সংস্কৃতির একটি অংশ।