বাংলা ভাষার একটি সুন্দর শব্দ হলো “কাঁখ”। এই শুধু শব্দ নয়, এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং দৈনন্দিন জীবনের নানান অভিজ্ঞতা। আজ আমরা জেনে নিব “কাঁখ” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে সম্পর্কিত নানান বিষয়।
কাঁখ শব্দের অর্থ কি?
“কাঁখ” শব্দের মূলত দুটি অর্থ প্রচলিত আছে:
- কাটিদেশ, কোমর অথবা কাঁকাল: “ছেলেটাকে কাঁখে করে বাজারে নিয়ে গেলাম” – এই বাক্যে “কাঁখ” শব্দটি কোমর অথবা কাটিদেশ বোঝাচ্ছে।
- বগল অথবা কক্ষ: “বইটা কাঁখে নিয়ে আয়” – এখানে “কাঁখ” শব্দটি বগল অথবা কক্ষ বোঝাচ্ছে।
কাঁখ শব্দের উৎপত্তি
মনে করা হয়, “কাঁখ” শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত “কক্ষ” শব্দ থেকে। প্রাকৃত ভাষায় “কক্ষ” রূপান্তরিত হয়েছে “কক্খ” -এ এবং পরবর্তীকালে তা পরিণত হয়েছে “কাঁখ” -এ।
কাঁখ শব্দের সমার্থক শব্দ
“কাঁখ” শব্দের অর্থভেদে বিভিন্ন সমার্থক শব্দ রয়েছে। যেমন:
- কোমর: কটি, কটিদেশ, কাঁকাল
- বগল: বহু, কক্ষ
কাঁখ শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্য এবং আমাদের দৈনন্দিন কথোপকথনে “কাঁখ” শব্দটির বহুল ব্যবহার রয়েছে।
- সাহিত্যে: “কাঁখে ধনুক কোঁদে তীর” (কাজী নজরুল ইসলাম) – এখানে “কাঁখ” শব্দটি ব্যবহার করে একজন যোদ্ধার একটি ঐতিহ্যবাহী ছবি তুলে ধরা হয়েছে।
- প্রবাদ-প্রবচনে: “হাতে লড়ি কাঁখে ঝুড়ি” – এই প্রবাদে “কাঁখ” শব্দটি ব্যবহার করে কোন কাজে অক্ষমতার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
- দৈনন্দিন জীবনে: “বইটা কাঁখে নিয়ে এসো”, “কোমরে ব্যাথা করছে” – এই ধরণের বাক্যে আমরা প্রতিনিয়ত “কাঁখ” শব্দটি ব্যবহার করে থাকি।
উপসংহার
“কাঁখ” শব্দটি কেবল একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের ভাষা এবং সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই ধরনের অনেক সুন্দর এবং অর্থবহ শব্দ আমাদের ভাষাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।