বাংলা ভাষার একটি সুন্দর ও তাৎপর্যপূর্ণ শব্দ হলো “কিংশুক”। শুধুমাত্র প্রকৃতিকে বর্ণনা করতে নয়, বরং মানুষের গুণাবলী ফুটিয়ে তুলতেও এই শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। আজকের আলোচনায় আমরা “কিংশুক” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে সম্পর্কিত নানান তথ্য নিয়ে আলোচনা করবো।
কিংশুক শব্দের অর্থ
“কিংশুক” শব্দটি মূলত দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়:
- পলাশ ফুল বা গাছ: এটি “কিংশুক” শব্দের সর্বাধিক প্রচলিত অর্থ। বসন্তকালে জ্বলন্ত অগ্নির শিখার মতো লাল রঙের পলাশ ফুল প্রকৃতিকে অপূর্ব সৌন্দর্য দান করে।
- নির্র্গন্ধ পলাশের মতো নির্গুণ ব্যক্তি: পলাশ ফুল যেমন সুন্দর কিন্তু গন্ধহীন, ঠিক তেমনি কোন ব্যক্তি দেখতে সুন্দর হলেও গুণহীন হলে তাকে “কিংশুক” বলা হয়ে থাকে।
কিংশুক শব্দের উৎপত্তি
“কিংশুক” একটি তৎসম শব্দ। সংস্কৃত “किंशुक” (Kiṃśuka) থেকে এই শব্দের উৎপত্তি।
কিংশুক শব্দের সমার্থক শব্দ
“কিংশুক” শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- পলাশ
- পরশ
- ত্রিপত্রক
- কাকপাদ
কিংশুক শব্দের ব্যবহার
“কিংশুক” শব্দটি বিভিন্নভাবে বাংলা সাহিত্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
- কবিতায়:
“রাগরক্ত কিংশুকে গোলাপে”
– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- প্রবাদে:
“কিংশুকভালের ভাগ্যে তাই সুরঞ্জনী” – এই প্রবাদটি দিয়ে বোঝানো হয়, যার ভাগ্যে দুঃখ লিখা থাকে, তার জীবনে সুখ আসলেও তা ক্ষণস্থায়ী হয়।
কিংশুক শব্দ সম্পর্কিত অন্যান্য তথ্য
- পদের নাম: বিশেষ্য
- বাংলা উচ্চারণ: [কিঙ্শুক্]
- ইংরেজি অর্থ: Flame of the forest, Bastard Teak
পরিশেষে বলা যায়, “কিংশুক” শব্দটি শুধু একটি শব্দ নয়, এটি বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।