আমাদের মাতৃভাষা বাংলা শব্দার্থের সাগরে ভাসমান। প্রতিটি শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে অতীতের ইতিহাস, ঐতিহ্য আর সংস্কৃতির চিহ্ন। ঠিক তেমনি একটি শব্দ “কাকুধ্বনি”। শব্দটি শুনতে যতটা মধুর, এর অর্থ আর ব্যবহার ততটাই গভীর। চলুন আজ আমরা জেনে নিই “কাকুধ্বনি” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং তা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সব তথ্য।
কাকুধ্বনি শব্দের অর্থ কি?
কাকুধ্বনি শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হলো কাতরোক্তি, হাহাকার বা আকুতি। যখন কেউ কষ্টে বা বিপদে পড়ে হতাশা ও আশঙ্কার সাথে সাহায্যের আবেদন জানায়, তখন তা “কাকুধ্বনি” হিসেবে বিবেচিত হয়।
কাকুধ্বনি শব্দের ব্যুৎপত্তি
কাকুধ্বনি একটি তৎসম শব্দ। দুটি সংস্কৃত শব্দ “কাকু” এবং “ধ্বনি” মিলে এই শব্দটি গঠিত। “কাকু” শব্দের অর্থ কাতর বা কাতরোক্তি এবং “ধ্বনি” শব্দের অর্থ শব্দ।
কাকুধ্বনি শব্দের সমার্থক শব্দ
- আকুতি
- কাতরোক্তি
- হাহাকার
- আর্তনাদ
- ফরিয়াদ
কাকুধ্বনি শব্দের ইংরেজি অনুবাদ
কাকুধ্বনি শব্দটির জন্য একক কোন ইংরেজি শব্দ না থাকলেও নিচের শব্দগুলো দিয়ে এর অর্থ প্রকাশ করা যেতে পারে:
- Plea
- Cry for help
- Desperate call
- Wail
- Lamentation
কাকুধ্বনি শব্দের ব্যবহার
কাকুধ্বনি শব্দটি সাহিত্য, কবিতা, গান, এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও ব্যবহৃত হয়। কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো:
- “তোর কাকু ধ্বনিতে মধ্যাহ্ন সকরুণ।” – **রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর**
- দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলোর কাকুধ্বনি কাউকে এড়িয়ে যায়নি।
- অসহায় মানুষটির কাকুধ্বনি শুনে তার প্রতি সবার করুণা হওয়া উচিত।
কাকুধ্বনি শব্দ সম্পর্কিত কিছু তথ্য
- পদের নাম (বাংলায়): অব্যয়
- Part of Speech (ইংরেজিতে): Adverb
- বাংলা উচ্চারণ: কা-কু-ধ্ব-নি (ka-ku-dho-ni)
শেষ কথা হলো, “কাকুধ্বনি” শব্দটি শুধুই একটি শব্দ নয়, বরং একটি মানবিক অনুভূতির প্রতীক। এই শব্দটি আমাদেরকে মানুষের দুঃখ-কষ্টের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে শিক্ষা দেয়।