“কষ” একটি প্রাচীন বাংলা শব্দ যার অনেক অর্থ রয়েছে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা শব্দটি শুনে থাকি, বিশেষ করে ফলমূলের সাথে জড়িত প্রসঙ্গে। এই পোস্টে আমরা “কষ” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং অন্যান্য তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।
কষ শব্দের অর্থ কি?
বাংলা ভাষায় “কষ” শব্দের অনেকগুলো অর্থ রয়েছে। প্রধানত এটি বিশেষ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- কষায় রস: এটি “কষ” শব্দের সবচেয়ে প্রচলিত অর্থ। কিছু ফল বা গাছের কাঁচা অবস্থায় থাকে এমন এক ধরণের তেতো, টক, বা কটু স্বাদের রসকে “কষ” বলা হয়। যেমন- কাঁচা আমের কষ, কুলের কষ।
- কষায় রসের ছোট: এটি প্রথম অর্থের একটি উপ-অর্থ।
- ক্বাথ বিশেষ: প্রাচীনকালে ঔষধ তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্ভিদ থেকে তৈরি এক ধরনের সার বা ক্বাথকে “কষ” বলা হত।
- উদ্ভিজ্জসার: এটি তৃতীয় অর্থের সাথে সম্পর্কিত।
- চামড়া পাকানোর রস: পশুর চামড়া ট্যান করে কার্যোপযোগী করার জন্য যে রস ব্যবহার করা হয় তাকেও “কষ” বলা হয়। ইংরেজিতে একে “tannin” বলে।
কষ শব্দের সমার্থক শব্দ
“কষ” শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- তেতো
- কটু
- টক
- কষা
- কষাল
- ট্যানিন (ইংরেজি)
কষ শব্দের ব্যবহার
“কষ” শব্দটি বিভিন্ন ভাবে ব্যবহৃত হয়:
- রোজকার জীবনে: “কাঁচা আমে অনেক কষ”, “কুলের কষ খুব তেতো” ইত্যাদি।
- সাহিত্যে: “কষ” শব্দটি কবিতা ও গানে রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন, জীবনের দুঃখ-কষ্টকে “কষ” বলে বর্ণনা করা হতে পারে।
- আয়ুর্বেদ ও ঔষধশাস্ত্রে: ঔষধ তৈরির প্রক্রিয়ায় “কষ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
কষ শব্দ নিয়ে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
বাংলায় “কষ” শব্দ ব্যবহার করে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু প্রবাদ- প্রবচন। যেমন:
- অতি লোভে তিতি কুষ্মাণ্ড। (অতিরিক্ত লোভ করলে তা বিষ হয়ে দাঁড়ায়।)
এই প্রবাদটিতে “কুষ্মাণ্ড” এক ধরনের কষা ফল যা অতিরিক্ত লোভের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
পরিশেষে বলা যায় যে, “কষ” একটি সমৃদ্ধ অর্থবোধক বাংলা শব্দ। এই শব্দটি আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
