বাংলা ভাষার একটি পরিচিত শব্দ “কবিরাজ”। অতীত থেকে বর্তমান, গ্রাম থেকে শহর— সর্বত্রই কমবেশি এই শব্দটির প্রচলন আমরা লক্ষ্য করি। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, এই শব্দটির অর্থ কী? কীভাবে এলো এই শব্দ, এর ব্যবহার কেমন— চলুন জেনে নেওয়া যাক “কবিরাজ” শব্দটি সম্পর্কে বিস্তারিত।
কবিরাজ শব্দের অর্থ
“কবিরাজ” শব্দটি মূলত সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত। “কবি” অর্থ কবি আর “রাজ” অর্থ রাজা। সমাসবদ্ধ হয়ে “কবিরাজ” শব্দের অর্থ দাঁড়ায় “কবিদের রাজা”। তবে বর্তমান সময়ে এই অর্থে “কবিরাজ” শব্দটির তেমন একটা প্রচলন নেই। বরং আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে পারদর্শী চিকিৎসকদের নির্দেশ করতেই “কবিরাজ” শব্দটি বেশি ব্যবহৃত হয়।
শব্দের গঠন
- কবি (বিশেষ্য) + রাজ (বিশেষ্য) = কবিরাজ (বিশেষ্য)
 
পদের নাম
- বাংলায়: বিশেষ্য
 - ইংরেজিতে: Noun
 
অর্থ
- বাংলা:
- কবিশ্রেষ্ঠ
 - আয়ুর্বেদ চিকিৎসক
 - বৈদ্য
 
 - ইংরেজি:
- Ayurvedic physician
 - Traditional healer
 
 
কবিরাজ শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্যে বিভিন্ন প্রসঙ্গে “কবিরাজ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে।
- আয়ুর্বেদ চিকিৎসক: “গ্রামের সকলেই জানত, রহিম কবিরাজের হাতে যাদুর মতো কাজ করে।”
 - কবিশ্রেষ্ঠ: “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যের কবিরাজ।” (এই প্রয়োগ বর্তমানে বিরল)
 
কবিরাজ শব্দের সমার্থক শব্দ
“কবিরাজ” শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- বৈদ্য
 - হেকিম
 - চিকিৎসক
 - আয়ুর্বেদাচার্য
 
কবিরাজ শব্দ ব্যবহার করে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী, রোগী না শোনে কবিরাজের নীতি।
 
এই প্রবাদটি দ্বারা বোঝানো হয় যে, যে ব্যক্তি কোনো কিছু শুনতে চায় না, তাকে যত যুক্তি দিয়ে বোঝানো হোক না কেন, সে তা গ্রহন করবে না।
উপসংহারে বলা যায়, “কবিরাজ” শব্দটি বাংলা ভাষার একটি প্রাচীন ও সমৃদ্ধ শব্দ। এই শব্দটি কেবল একজন চিকিৎসককে নির ্দেশ করে না, বরং আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
