আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা নানান শব্দ ব্যবহার করে থাকি। কিছু শব্দ খুবই পরিচিত, আবার কিছু শব্দ আমাদের কাছে অপরিচিত। ‘কঠিয়া’ শব্দটি এমনই একটি শব্দ যা হয়তো আমরা সকলে প্রতিদিন ব্যবহার করি না। তবে, বাংলা সাহিত্য এবং লোকসংস্কৃতিতে এই শব্দটির একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। আজকের এই পোস্টে আমরা জানব ‘কঠিয়া’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে সম্পর্কিত কিছু আকর্ষণীয় তথ্য।
কঠিয়া শব্দের অর্থ কি?
‘কঠিয়া’ শব্দটি প্রধানত দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে:
- কন্ঠী: এটি ‘কঠিয়া’ শব্দটির প্রধান এবং সর্বাধিক প্রচলিত অর্থ। কন্ঠী হলো এক ধরনের গহনা যা গলায় পরিধান করা হয়। সাধারণত মুক্তা, পুঁতি বা ধাতু দিয়ে তৈরি করা হয়।
- কন্ঠীধারী বৈষ্ণব: ‘কঠিয়া’ শব্দটি কখনো কখনো কন্ঠীধারী বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মানুষদের অর্থেও ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
কঠিয়া শব্দের উৎপত্তি
‘কঠিয়া’ শব্দটি সংস্কৃত ‘কন্ঠ’ শব্দ থেকে এসেছে। ‘কন্ঠ’ শব্দের অর্থ “গলা”। ধীরে ধীরে ‘কন্ঠ’ > ‘কট্ঠি’ > ‘কঠি’ – এভাবে পরিবর্তিত হয়ে ‘কঠি’ এর সাথে বাংলা ‘আ’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ‘কঠিয়া’ শব্দের উৎপত্তি হয়।
কঠিয়া শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কঠিয়া’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- কন্ঠী
- হার
- মালা
- মান্দলিয়া
কঠিয়া শব্দের ব্যবহার
‘কঠিয়া’ শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতে দেখা যায়।
- সাহিত্য: বাংলা সাহিত্যে ‘কঠিয়া’ শব্দটি প্রায়শই ব্যবহৃত হয়েছে। বিশেষ করে, প্রাচীন কাব্য, গান, এবং উপন্যাসে এই শব্দটির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
- ধর্মীয় প্রসঙ্গে: কন্ঠীধারী বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ‘কঠিয়া’ শব্দটির একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
- দৈনন্দিন জীবনে: বর্তমানে ‘কঠিয়া’ শব্দটির ব্যবহার অনেকটা কমে গেলেও, গ্রামীণ এলাকায় এখনও এই শব্দটি প্রচলিত আছে।
কঠিয়া শব্দ ব্যবহার করে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- “কঠিয়া গেলেও কান যায় না”: এই প্রবাদটির অর্থ হলো, বাইরের আড়ম্বর গেলেও মানুষের স্বভাব বদলায় না।
‘কঠিয়া’ শব্দটি কেবল একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি অংশ। এই ধরনের অনেক অজানা শব্দ আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে।