বাংলা ভাষার অপরূপ সৌন্দর্য তার সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডারে। এই বিশাল ভাণ্ডারে এমন কিছু শব্দ রয়েছে যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুব একটা ব্যবহার করি না, তবুও এদের তাৎপর্য অপরিসীম। এরকমই একটি শব্দ হল “কঠিনীভূত”। আজ আমরা এই শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে সম্পর্কিত নানান তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।
কঠিনীভূত শব্দের অর্থ
কঠিনীভূত শব্দটি একটি বিশেষণ, যার অর্থ হল “শক্ত হয়ে গেছে এমন”। কোনো তরল পদার্থ যখন শক্ত রূপ ধারণ করে, তখন আমরা বলতে পারি “তরলটি কঠিনীভূত হয়েছে”। শুধু তরল নয়, কোনো নরম বস্তুও কঠিন হয়ে গেলে আমরা “কঠিনীভূত” শব্দটি ব্যবহার করতে পারি।
কঠিনীভূত শব্দের ব্যুৎপত্তি
কঠিনীভূত শব্দটি তৎসম বা সংস্কৃত শব্দ। এটি তিনটি ধাতু থেকে গঠিত:
- কঠিন: যার অর্থ শক্ত।
- (চ্রি)ঈ: এটি একটি স্ত্রীলিঙ্গ প্রত্যয়।
- ভূত (√ভূ+ত(ক্ত)): যার অর্থ হয়ে গেছে এমন।
কঠিনীভূত শব্দের উচ্চারণ
কঠিনীভূত শব্দটির বাংলা উচ্চারণ হল “kothini-bhüto”.
কঠিনীভূত শব্দের পদের নাম
কঠিনীভূত শব্দটি একটি বিশেষণ।
ইংরেজিতে: Adjective
কঠিনীভূত শব্দের ইংরেজি অর্থ
- Solidified
- Hardened
- Congealed
কঠিনীভূত শব্দের ব্যবহার
কঠিনীভূত শব্দটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হল:
- শীতকালে নদীর জল কঠিনীভূত হয়ে বরফে পরিণত হয়।
- দুধ ফ্রিজে রাখলে কঠিনীভূত হয়ে যায়।
- তার মন একবার যা ঠিক করে ফেলে তা কঠিনীভূত হয়ে যায়।
কঠিনীভূত শব্দের সমার্থক শব্দ
কঠিনীভূত শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- ঘনীভূত
- জমাট
- শক্ত
- কঠিন
- দৃঢ়
কঠিনীভূত শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
কঠিনীভূত শব্দটি সরাসরি ব্যবহার করে তৈরি কোনো প্রবাদ-প্রবচন না থাকলেও, এর সমার্থক শব্দ “কঠিন” বা “শক্ত” ব্যবহার করে অনেক প্রবাদ-প্রবচন রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ:
- “লোহা কঠিন হলেও আগুনে পোড়ে।” (অর্থ: যত শক্তিশালীই হোক না কেন, সবার উপরেই কারো না কারো ক্ষমতা থাকে)।
পরিশেষে বলা যায়, “কঠিনীভূত” শব্দটি হয়তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুব একটা ব্যবহার করি না। তবে এর মাধ্যমে আমরা বাংলা ভাষার সমৃদ্ধ শব্দভাণ্ডার ও ব্যবহারের বৈচিত্র্য সম্পর্কে অবগত হতে পারি।