‘কোঁচ’ শব্দটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুব একটা শুনতে পাই না, বিশেষ করে শহুরে জীবনে। তবে গ্রামবাংলার সাথে যাদের যোগাযোগ আছে, নদীতে মাছ ধরা কিংবা কৃষিকাজের সাথে যুক্ত, তারা এই শব্দটির সাথে অপরিচিত নন। আজ আমরা এই লেখায় ‘কোঁচ’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে সম্পর্কিত নানান তথ্য জানবো।
কোঁচ শব্দের অর্থ কি?
কোঁচ হলো এক ধরনের তীক্ষ্ণাগ্র বহু লৌহশলাকাযুক্ত বর্শা বিশেষ, যা প্রধানত মাছ, কচ্ছপ ইত্যাদি শিকার করতে ব্যবহৃত হয়।
কোঁচ শব্দের উৎপত্তি
‘কোঁচ’ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে তৎসম ‘কুন্ত’ শব্দ থেকে। প্রাকৃত ভাষায় ‘কুন্ত’ পরিণত হয় ‘কুংত’-এ, এবং পরবর্তীতে আরো রূপান্তরিত হয়ে ‘কুংচ’ হয়ে ‘কোঁচ’-এ পরিণত হয়।
কোঁচ শব্দের সমার্থক শব্দ
- ত্রিশূল
- শূল
- বর্শা
কোঁচ শব্দের ব্যবহার
কোঁচ শব্দটি প্রধানত মাছ ধরার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও এটি অন্যান্য ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হতে পারে।
- মাছ ধরা: নদী, পুকুর, খাল-বিল ইত্যাদি জলাশয়ে মাছ শিকারের জন্য কোঁচ ব্যবহার করা হয়।
- আত্মরক্ষা: প্রাচীনকালে শিকারী জানোয়ার থেকে আত্মরক্ষার জন্য কোঁচ ব্যবহার করা হত।
কোঁচ শব্দের সাথে সম্পর্কিত প্রবাদ-প্রবচন
কোঁচ শব্দটি দিয়ে কিছু প্রবাদ-প্রবচন রয়েছে যা আমাদের ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছে। যেমন:
- ‘কোঁচে পড়া মাছ ভাতে ভয় পায় না।’ – অর্থাৎ, যে একবার বিপদে পড়েছে সে আবার সেই বিপদ থেকে ভয় পায় না।
‘কোঁচ’ শব্দটি যদিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এখন আর ততটা ব্যবহৃত হয় না, তবুও এটি আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।