‘কেয়ারি’ শব্দটির সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। কবিতায়, গানে, গল্পে, প্রবাদে এমনকি আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও শব্দটি ব্যবহৃত হতে দেখা যায়। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন, ‘কেয়ারি’ শব্দটির আসল অর্থ কী? কীভাবে এই শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়েছিল? চলুন আজকে আমরা ‘কেয়ারি’ শব্দটি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।
‘কেয়ারি’ শব্দের অর্থ
বাংলা ভাষায় ‘কেয়ারি’ শব্দটি মূলত বিশেষ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর দুটি প্রধান অর্থ রয়েছে:
- আল দিয়ে ঘেরা ক্ষেত, ক্ষেত্রখণ্ড বা উদ্যান: এ অর্থে ‘কেয়ারি’ শব্দটি ফুল, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি রোপণ করা জমির ছোট একটি অংশকে নির্দেশ করে।
- সযত্ন-বিন্যাস: ‘কেয়ারি করা’ বলতে কোনো কিছু সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো বোঝায়।
‘কেয়ারি’ শব্দের উৎপত্তি
‘কেয়ারি’ শব্দটির উৎপত্তি তৎসম ‘কেদারিকা’ শব্দ থেকে। প্রাকৃত ভাষায় ‘কেদারিকা’ পরিণত হয় ‘কেআরিআ’ এবং পরবর্তীতে তা পরিবর্তিত হয়ে ‘কেয়ারি’ শব্দটির জন্ম হয়।
‘কেয়ারি’ শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কেয়ারি’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- ক্ষেত
- ভূমি
- জমি
- কানন
- বাগান
- বীথি
‘কেয়ারি’ শব্দের ব্যবহার
কিছু উদাহরণ:
- “কেয়ারি দেখিয়া বলে, নাহি দেখি কোনকালে, এমন ফুলের কারবার।”– সৈয়দ হামজা
- “উঠল রেঙে কানন-ভূমি লাল ফুলের কেয়ারী তুল।”– কাজী নজরুল ইসলাম
- “মা ফুলের কেয়ারিতে পানি দিচ্ছেন।”
- “তারা বইগুলো কেয়ারি করে রাখল।”
‘কেয়ারি’ শব্দ ব্যবহার করে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- যার কেয়ারি, তারই ধান।
- কেয়ারি করে ফসল ফলাও।
উপসংহার: ‘কেয়ারি’ শব্দটি শুধু একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি অংশ। এই শব্দটি আমাদের মনে জাগায় প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা।