বাংলা ভাষার ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধি লুকিয়ে আছে তার অসংখ্য শব্দের মাঝে। প্রতিটি শব্দের রয়েছে নিজস্ব ইতিহাস, বৈচিত্র্য এবং ব্যবহারের স্বতন্ত্র ধরণ। আজ আমরা আলোচনা করবো ‘কেশী’ শব্দটি নিয়ে, যা আপাত দৃষ্টিতে খুব সাধারণ মনে হলেও এর ভেতরে লুকিয়ে আছে নানান তথ্য।
‘কেশী’ শব্দের অর্থ কি?
‘কেশী’ শব্দটি মূলত একটি বিশেষণ পদ, যা দুটি ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে:
- দীর্ঘ, ঘন এবং সুন্দর কেশ-বিশিষ্ট: কেউ যদি সুন্দর, ঘন এবং লম্বা চুলের অধিকারী হন, তাকে ‘কেশী’ বলা যেতে পারে। যেমন – “রাজকন্যের কেশী চুল দেখে সকলেই মুগ্ধ হয়েছিল।”
- কেশ আছে এমন: যেকোনো ব্যক্তি বা প্রাণীর যদি কেশ থাকে তাকে ‘কেশী’ বলা যেতে পারে। এই অর্থে ‘কেশী’ শব্দটি ‘কেশহীন’ শব্দের বিপরীতার্থক।
এছাড়াও, ‘কেশী’ একটি বিশেষ্য পদ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। হিন্দু পুরাণ অনুসারে, কংসের একজন মল্লের নাম ছিল কেশী, যাকে শ্রীকৃষ্ণ হত্যা করেছিলেন।
‘কেশী’ শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কেশী’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- লম্বাকেশ
- ঘনকেশ
- সুকেশ
- কেশবান
- অলকশোভিত
‘কেশী’ শব্দের ব্যবহার
‘কেশী’ শব্দটি বিভিন্নভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- সাহিত্যে: কবিতা, গান, গল্প ইত্যাদিতে ‘কেশী’ শব্দটি মানুষের সৌন্দর্য বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়। যেমন – “তার কেশী চুল ঝরে পড়ে তার কাঁধের উপর।”
- ধর্মীয় গ্রন্থে: হিন্দু পুরাণে ‘কেশী’ নামক মল্লের কাহিনী বর্ণিত আছে।
- দৈনন্দিন জীবনে: আমরা প্রায়ই ‘কেশী’ শব্দটি ব্যবহার করি যারা সুন্দর, ঘন এবং লম্বা চুলের অধিকারী তাদের বর্ণনা দিতে।
‘কেশী’ শব্দ সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
বাংলা ভাষায় কেশ নিয়ে অনেক প্রবাদ-প্রবচন প্রচলিত আছে। যেমন:
- কেশ ধরে টানলে কি না আসে?
- কেশ ফাঁক করে জল দেখা
উচ্চারণ ও অন্যান্য তথ্য
- বাংলা উচ্চারণ: কেশী (kēśī)
- পদের নাম: বিশেষণ এবং বিশেষ্য
- ইংরেজি অর্থ: long-haired, having long and thick hair
‘কেশী’ শব্দটি বাংলা ভাষার একটি সুন্দর ও অর্থবহ শব্দ। এই শব্দটি ব্যবহার করে আমরা আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারি।