“কেরানি” – শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে হাতে কলম আর সামনে হিসাবের খাতা। কিন্তু শুধুই কি হিসাবের খাতায় সীমাবদ্ধ এই শব্দটি? আসলে ‘কেরানি’ শব্দটির ব্যবহার বহুমুখী, এর ইতিহাস ও ব্যুৎপত্তি অনেকেরই অজানা।
কেরানি শব্দের অর্থ
বাংলা ভাষায় ‘কেরানি’ শব্দটি সাধারণত একজন লেখক কর্মচারীকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। অফিস-আদালত, ব্যাংক, কোম্পানি – সর্বত্রই হিসাব-নিকাশ, তথ্য সংরক্ষণ , চিঠিপত্র তৈরি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়োজিত থাকেন একজন কেরানি।
কেরানি শব্দের উৎপত্তি
‘কেরানি’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘करणिक’ (করণিক) থেকে। করণিক থেকে ক্রমশ পরিবর্তিত হয়ে ‘করণি’ এবং অবশেষে ‘কেরানি’ শব্দটির উৎপত্তি হয়।
কেরানি শব্দের সমার্থক শব্দ
কেরানি শব্দের কিছু অন্যতম সমার্থক শব্দ হলো:
- মুনশি
- লেখক
- কারকুন
- অনুলেখক
- লিপিকার
কেরানি শব্দের ব্যবহার
শুধু কার্যালয়ের কর্মচারী বোঝাতেই নয়, ব্যঙ্গাত্মক অর্থেও কেরানি শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন – “মাছিমারা কেরানি”। এই প্রবাদটি যে সকল ব্যক্তি অন্যের লেখা অর্থ না বুঝে হুবহু নকল করে তাদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
কেরানি শব্দটি দিয়ে তৈরি কিছু প্রচলিত প্রবাদ-প্রবচন:
- কেরানির খাতায় কলম ঘষা। (অর্থহীন কাজ করা)
- কেরানির মেয়ে কাস্তের ধার বোঝে না। (অভিজ্ঞতাহীন ব্যক্তি বিপদের গভীরতা বোঝে না)।
পরিশেষে বলা যায়, ‘কেরানি’ শব্দটি শুধু একটি পেশা নয়, বরং বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।