“কুঁড় কুঁড় করে ডেকে যায়, নীল জলের ধার, জেলে ডাকে সাবধানে, হায় রে মাঝি নাও খোল।” শৈশবের প্রিয় এই ছড়ায় পরিচিত ‘কুড়ল’। নীল জলের ধারে, জেলেদের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত এই পাখিটির সাথে আমাদের সবারই কমবেশি পরিচয় আছে। কিন্তু ‘কুড়ল’ শব্দটির অর্থ কিংবা এর ব্যবহার সম্পর্কে আমরা কতটুকুই বা জানি? চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক ‘কুড়ল’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে জড়িত কিছু মজার তথ্য।
কুড়ল শব্দের অর্থ
‘কুড়ল’ মূলত একটি তৎসম শব্দ, যা এসেছে সংস্কৃত ‘কুরর’ থেকে। ‘কুরর’ শব্দের অর্থ হচ্ছে এক প্রকার মৎস্যভোজী পাখি। বাংলা ভাষায় ‘কুড়ল’ শব্দটি দুটি অর্থ বহন করে।
- এক প্রকার ছোট মাছ ধরা জলচর পাখি।
- কাঁকড়া জাতীয় এক প্রকার ছোটো সামুদ্রিক প্রাণী।
কুড়ল শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কুড়ল’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ রয়েছে, যা নিচে তুলে ধরা হলো:
- মাছ শিকারি পাখি
- পানকৌড়ি
- বক
- সারস
- হাড়গিলা
- গ্যাংচিল
কুড়ল শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ
ইংরেজিতে ‘কুড়ল’ শব্দের প্রতিশব্দ হিসেবে ‘Kingfisher’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
কুড়ল শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্য এবং লোকসংস্কৃতিতে ‘কুড়ল’ শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।
- সাহিত্যে: বিভিন্ন কবি লেখক তাদের লেখায় ‘কুড়ল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেমন –
- “কুঁড় কুঁড় করে ডেকে যায়, নীল জলের ধার।”
- গানে: বাংলা লোকগানেও ‘কুড়ল’ শব্দটির উপস্থিতি লক্ষনীয়।
- “কুড়ল বলে যা রে, আমার বন্ধু রে।”
এছাড়াও, ‘কুড়ল’ শব্দটি দৈনন্দিন জীবনেও ব্যবহৃত হয়।
কুড়ল পাখি সম্পর্কে কিছু তথ্য
- কুড়ল Alcedinidae পরিবারের অন্তর্গত একটি রঙিন এবং আকর্ষণীয় পাখি।
- বিশ্বে প্রায় ৯০ প্রজাতির কুড়ল আছে।
- এরা সাধারণত নদী, ঝিল, খাল, বিল এবং সমুদ্র সৈকত এলাকায় দেখা যায়।
- কুড়ল প্রধানত মাছ খেয়ে থাকে।
- এদের ঠোঁট লম্বা এবং ধারালো হয়, যা মাছ ধরতে সাহায্য করে।
- কুড়ল তাদের সুন্দর রঙ এবং আকর্ষণীয় উড্ডয়নের জন্য মানুষের কাছে অনেক প্রিয়।
পরিশেষে বলা যায়, ‘কুড়ল’ শুধুই একটি শব্দ নয়, বরং বাংলার প্রকৃতি ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।