‘কুশন্ডিকা’ শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিবাহ অনুষ্ঠানের সেই পবিত্র মুহূর্তের ছবি, যেখানে ব্রাহ্মণ পুরোহিত মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে নবদম্পতির জন্য মঙ্গল কামনা করে আগুন জ্বালান। কিন্তু ‘কুশন্ডিকা’ শুধুই কি বিবাহ অনুষ্ঠানের একটি আচার, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে আরও গভীর তাৎপর্য?
কুশন্ডিকা শব্দের অর্থ কি?
‘কুশন্ডিকা’ শব্দটি মূলত সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। এর মূলে রয়েছে ‘কুশ’, ‘অন্ড’ এবং ‘ক’ – এই তিনটি ধাতু। ‘কুশ’ অর্থ একপ্রকার পবিত্র তৃণ, ‘অন্ড’ অর্থ ডিম্বাকৃতি এবং ‘ক’ অর্থ করণীয়। অর্থাৎ, কুশ দিয়ে তৈরি ডিম্বাকৃতি যে জিনিস, যা দিয়ে হোম করা হয়, তাকেই বলা হয় কুশন্ডিকা।
কুশন্ডিকা শব্দের সমার্থক শব্দ
কুশন্ডিকা শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- হোমকুণ্ড
- যজ্ঞকুণ্ড
- অগ্নিকুণ্ড
কুশন্ডিকা শব্দের ব্যবহার
কুশন্ডিকা শব্দটি প্রধানত হিন্দু ধর্মীয় অনুষ্ঠান, বিশেষ করে বিবাহ অনুষ্ঠান এবং যজ্ঞের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
- বিবাহ অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণ পুরোহিত কুশন্ডিকায় অগ্নি প্রজ্বলন করলেন।
- যজ্ঞের জন্য বিরাট কুশন্ডিকা তৈরি করা হয়েছিল।
কুশন্ডিকা শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন:
- কুশন্ডিকার নয় এ শিখা, এ যে ভীষণ ভয়ঙ্কর। (এই প্রবাদটি দিয়ে বোঝানো হয় যে, কোনো কিছুর বাহ্যিক রূপ দেখে ভুল করা উচিত নয়, কারণ ভেতরে ভয়ঙ্কর কিছু লুকিয়ে থাকতে পারে।)
‘কুশন্ডিকা’ শব্দটি কেবল একটি ধর্মীয় প্রতীক নয়, বরং এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস।