“কুলাঙ্গার” শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে এক তীব্র ভৎর্সনা, এক তীব্র ঘৃণা। যখন কেউ তার কর্ম দিয়ে, চরিত্র দিয়ে, আচরণ দিয়ে নিজের পরিবারের জন্য কলঙ্ক ডেকে আনে, তখন তাকে “কুলাঙ্গার” বলে সম্বোধন করা হয়। এই একটি শব্দের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয় যে ব্যক্তি কেবল নিজের জন্য নয়, বরং তার পূর্বপুরুষ এবং উত্তরপুরুষদের জন্যও লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কুলাঙ্গার শব্দের অর্থ কি?
“কুলাঙ্গার” শব্দটি দুটি পদের সমন্বয়ে গঠিত: “কুল” এবং “অঙ্গার”. “কুল” অর্থ বংশ, পরিবার, বংশধারা। “অঙ্গার” অর্থ কয়লা, আগুনের অংশ। এভাবে, “কুলাঙ্গার” শব্দের অর্থ দাঁড়ায় “যে ব্যক্তি তার কর্মের মাধ্যমে কুলকে বা পরিবারকে কলঙ্কিত করে, যেন আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।”
কুলাঙ্গার শব্দের সমার্থক শব্দ
- কুলকলঙ্ক
- কুলধ্বংসী
- কুলছারণ
- কুলঘাতক
- কুলশ্রেষ্ঠ
কুলাঙ্গার শব্দের ব্যবহার
“কুলাঙ্গার” শব্দটি সাধারণত অত্যন্ত তীব্র ভর্ৎসনার অর্থে ব্যবহৃত হয়। কারও প্রতি তীব্র ঘৃণা, রাগ, অনুশোচনা প্রকাশের জন্য এই শব্দ ব্যবহার করা হয়। উদাহরণস্বরূপ:
- “তুই এমন কুলাঙ্গার কাজ করলি যে আমাদের সমাজে মুখ দেখাতেও লজ্জা লাগছে।”
- “তোমার মতন কুলাঙ্গার ছেলে জন্ম দিয়ে আমার জীবনটাই বৃথা গেল।”
কুলাঙ্গার শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু তথ্য
- পদের নাম: বিশেষ্য
- উচ্চারণ: কু-লাং-গার
- ব্যুৎপত্তি: সংস্কৃত
- সমাস: তৎপুরুষ সমাস
প্রবাদ-প্রবচন:
- একটা মাছ গোটা পুকুর নোংরা করে। (একজন কুলাঙ্গার সমগ্র পরিবারের মানহানি করে।)
উপসংহার: “কুলাঙ্গার” শব্দটি বাংলা ভাষার একটি তাৎপর্যপূর্ণ শব্দ যা মানুষের অন্যায়, অপকর্মের প্রতি আমাদের ঘৃণা ও বিরাগ প্রকাশ করে। এই শব্দটির মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে, আমাদের কর্মের প্রভাব কেবল আমাদের উপর নয়, বরং আমাদের পরিবার, সমাজের উপরেও পড়ে।