‘কুবচন’ – শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নেতিবাচক কিছু ভাব। কাউকে আঘাত দেওয়া, অপমান করা, ছোট করার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত কটু বাক্যই কুবচন। অনেক সময় রাগ, ক্ষোভ, হিংসা থেকেও আমাদের মুখ থেকে এমন কথা বেরিয়ে আসে যা অন্যের মনে গভীর ক্ষত তৈরি করে। বাংলা ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ‘কুবচন’ সম্পর্কে আজ আমরা জানবো বিস্তারিত।
কুবচন শব্দের অর্থ কি?
সহজ ভাষায়, কুবচন হলো খারাপ, অশ্লীল, কটু, মানুষকে আঘাত করে এমন কথা। যেমন, কাউকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা, অন্যের শারীরিক ত্রুটি নিয়ে বিদ্রুপ করা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি নিয়ে কটাক্ষ করা ইত্যাদি।
কুবচনের অন্যান্য অর্থ
- গালি
- বিদ্রুপ
- কটাক্ষ
- নিন্দা
- কুৎসা
- পরনিন্দা
- অপবাদ
কুবচন শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্যে ‘কুবচন’ শব্দটি বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়েছে।
- উদাহরণ ১: “পদাঘাত করি তারে কহিল কুবাণী” – (মেঘনাদবধ কাব্য, মাইকেল মধুসূদন দত্ত)।
- উদাহরণ ২: “দুহিতার কুবচন শুনিয়া জননী মূর্ছা গেলেন” – (দৌলত উজির, বাহরাম খান)।
কুবচন শব্দের ভাষাতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা
- শব্দ: কুবচন
- পদের নাম (বাংলা): বিশেষ্য
- পদের নাম (ইংরেজি): Noun
- উচ্চারণ: kubochȯn (কুবোচোন)
- ব্যুৎপত্তি: সংস্কৃত (কু + বচন)
- অর্থ:
- বাংলা: কুৎসিত কথা; অশ্লীল বাক্য; কটুকথা; কুৎসা; নিন্দা।
- ইংরেজি: abusive language; slander; vilification; defamation.
কুবচন শব্দের সমার্থক শব্দ
কুবচন শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- গালিগালাজ
- বিষবাক্য
- কটুবাক্য
- নিন্দাসূচক কথা
- অপবাদসূচক কথা
- কুৎসা রটনা
কুবচন সম্পর্কিত প্রবাদ-প্রবচন
- মুখের ভাষা, তলোয়ারের চেয়েও তীক্ষ্ণ।
- যার যা বলার নেই, সে কথা বলে সাত জন্মের পাপ মোচন করতে।
উপসংহার: কুবচন ব্যবহার কখনোই কাম্য নয়। একটি শালীন ও সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য আমাদের সকলের উচিত কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা এবং অন্যের মন আঘাত করে এমন কোনো কথা না বলা।