‘কুতুপ’ – বাংলা ভাষার একটি অনিন্দ্য সুন্দর শব্দ। ছোট্ট এই শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকার নানান কাহিনী। আজ আমরা জেনে নেব ‘কুতুপ’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে জড়িত কিছু মজার তথ্য।
কুতুপ শব্দের অর্থ কি?
‘কুতুপ’ শব্দটি মূলত একটি বিশেষ্য পদ। বাংলায় এর অর্থ হলো চামড়া দিয়ে তৈরি ছোট তেলের পাত্র। অর্থাৎ, তেল রাখার জন্য যে ছোট চামড়ার পাত্র ব্যবহার করা হয়, তাকেই বলা হয় ‘কুতুপ’।
কুতুপ শব্দের ব্যুৎপত্তি
‘কুতুপ’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘কুতু’ এবং ‘ডুপ’ শব্দদ্বয় থেকে। ‘কুতু’ অর্থ ক্ষুদ্র এবং ‘ডুপ’ অর্থ পাত্র।
কুতুপ শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কুতুপ’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- কুপি
- টোপা
- কলসি (বিশেষ করে ছোট কলসি)
- ভাঁড়
কুতুপ শব্দের ব্যবহার
আগেকার দিনে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, তেল রাখার জন্য ‘কুতুপ’ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হত। চামড়া দিয়ে তৈরি হওয়ায় ‘কুতুপ’ ছিল একদিকে যেমন টেকসই, তেমনি অন্যদিকে সহজে বহনযোগ্য।
কিছু উদাহরণ:
- “দাদু বাজার থেকে এক ‘কুতুপ’ ভর্তি সরিষার তেল আনলেন।”
- “পুরোনো সেই ‘কুতুপ’টিতে এখনও মায়ের হাতের গন্ধ রয়ে গেছে।”
সাহিত্যে ‘কুতুপ’ শব্দ
বিভিন্ন বাংলা সাহিত্যে ‘কুতুপ’ শব্দের ব্যবহার দেখা যায়।
- “প্রচুর কাপিশেয়ী সুরার কুতুপ আনা হয়” – রাহুল সাংকৃত্যায়ন
কুতুপ শব্দ সম্পর্কে কিছু কথা
- ‘কুতুপ’ শুধু একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের একটি অংশ।
- আধুনিক যুগে ‘কুতুপ’ শব্দের ব্যবহার কমে গেলেও, এটি এখনও আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিতে জীবিত আছে।
‘কুতুপ’ শব্দটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের অতীতের কথা, আমাদের ঐতিহ্যের কথা।