আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই এমন কিছু শব্দ আমরা ব্যবহার করে থাকি, যার অর্থ ও ব্যবহার সম্পর্কে আমরা সম্পূর্ণরূপে অবগত থাকি না। ‘কুতর্ক’ তেমনই একটি শব্দ যা আমরা প্রায়শই শুনে থাকি, বিশেষ করে কোন তর্ক-বিতর্কের প্রসঙ্গে। কিন্তু ‘কুতর্ক’ শব্দটির সঠিক অর্থ কী, কিংবা কখন এটি ব্যবহার করা উচিত, তা কি আমরা সবসময় জানি?
কুতর্ক শব্দের অর্থ
সহজ ভাষায়, ‘কুতর্ক’ হলো যুক্তিহীন অথবা অবান্তর তর্ক। যখন কেউ শুধুমাত্র তর্ক করার জন্য, প্রতিপক্ষকে হেয় করার জন্য, অথবা নিজের মতামত চাপিয়ে দেওয়ার জন্য যুক্তিহীন কথা বলে, তখন তাকে ‘কুতর্ক’ বলা হয়।
কুতর্ক শব্দের উৎপত্তি
কুতর্ক শব্দটি তৎসম। এটি দুটি সংস্কৃত শব্দের সমন্বয়ে গঠিত: ‘কু’ এবং ‘তর্ক’। ‘কু’ অর্থ খারাপ, নিকৃষ্ট এবং ‘তর্ক’ অর্থ যুক্তি, বিতর্ক। সুতরাং, ‘কু’ এবং ‘তর্ক’ এই দুই শব্দ মিলিয়ে ‘কুতর্ক’ শব্দের অর্থ দাঁড়ায় ‘খারাপ তর্ক’ অথবা ‘যুক্তিহীন তর্ক’।
কুতর্ক শব্দের সমার্থক শব্দ
বাংলা ভাষায় ‘কুতর্ক’ শব্দের বেশ কিছু সমার্থক শব্দ রয়েছে। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- বাজে তর্ক
- হঠকারিতা
- জেদ
- অযুক্তি
- বিতণ্ডা
- ছল
- প্রলাপ
কুতর্ক শব্দের ব্যবহার
লিখিত ও মৌখিক উভয় ধরনের ভাষাতেই ‘কুতর্ক’ শব্দটির ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- তুমি কি সবসময় কুতর্ক করে সময় নষ্ট করবে?
- তার সাথে কোন বিষয়ে আলোচনা করা সম্ভব নয়, সে সবসময় কুতর্ক শুরু করে।
- রাজনীতিতে কুতর্কের কোন স্থান নেই।
কুতর্ক শব্দ ব্যবহারে সাবধানতা
‘কুতর্ক’ শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। কারো যুক্তি আপনার পছন্দ না হলেই তাকে ‘কুতর্ক’ বলা উচিত নয়। মনে রাখবেন, সম্মানজনক ভাষায় কথা বলা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
পরিশেষে বলা যায়, ভাষা হচ্ছে আমাদের প্রকাশের মাধ্যম। তাই ভাষার সঠিক ব্যবহার জানা এবং সে অনুযায়ী কথা বলা আমাদের সকলের উচিত।