“লিখিতে লিখিতে কায়স্থকুল হৈল ভোর”- সৈয়দ আলাওলের এই কথাগুলি শুধুমাত্র একটি উক্তি নয়, বরং কায়স্থ সম্প্রদায়ের পরিচয়ের প্রতিচ্ছবি। শতাব्दी ধরে, তারা তাদের জ্ঞান, বিচক্ষণতা এবং কর্মদক্ষতার মাধ্যমে সমাজে অনন্য একটি স্থান তৈরি করেছে। আজ, আমরা জানার চেষ্টা করবো “কায়স্থ” শব্দটির অর্থ, এর ইতিহাস এবং এর সাথে যুক্ত বিভিন্ন তথ্য সম্পর্কে।
কায়স্থ শব্দের অর্থ কি?
কায়স্থ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত “कायस्थ” থেকে। এর অর্থ “কায়” বা “শরীর” এবং “স্থ” বা “স্থিত” – যার অর্থ “যারা শরীর নিয়ে স্থিত”। প্রাচীন কালে, রাজা-বাদশাহদের “কায়” বা “শরীর” রক্ষার জন্য যারা নিয়োজিত ছিলেন, তাদেরকে “কায়স্থ” বলা হতো। পরবর্তীতে, রাজকার্যে বিশেষ করে লেখালেখির কাজে দক্ষতার কারণে তারা রাজসভার গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত হন।
শব্দের ব্যবহার:
- বাংলা উচ্চারণ: কায়স্থো (kāẏosthō)
- পদের নাম: বিশেষ্য (Noun)
- বাংলা অর্থ:
- একটি নির্দিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায়।
- পূর্বে রাজকীয় কার্যালয়ে লেখক, হিসাবরক্ষক এবং প্রশাসনিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন।
- ইংরেজি অর্থ:
- A Hindu caste traditionally occupied in record-keeping.
- A writer or scribe.
সমার্থক শব্দ:
কায়স্থ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- কেরানি
- মুহুরি
- লিখক
- শাস্ত্রজ্ঞ
- পণ্ডিত
কায়স্থ শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন:
- কায়স্থের কলম চলে লন্ডন।
- কায়স্থের বুদ্ধি তেঁতুলের গুঁটি।
এই প্রবাদগুলি কায়স্থ সম্প্রদায়ের লেখাপড়া এবং জ্ঞানের প্রতি তাদের প্রবণতাকে প্রতিফলিত করে।
উপসংহারে, “কায়স্থ” শব্দটি শুধু একটি জাতিগত পরিচয়ের ইঙ্গিত করে না, বরং একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং জ্ঞানচর্চার পরম্পরার প্রতিনিধিত্ব করে। আজও, কায়স্থ সম্প্রদায় তাদের বিদ্যাবুদ্ধি, কর্মদক্ষতা এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।