কাশী! শব্দটির মাঝে যেন অতীতের পদচাপ, যেন এক আধ্যাত্মিক শক্তির টান। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে কাশী কেবল একটি শহর নয়, তীর্থস্থানও নয়, বরং এক পবিত্রতম ধাম। আজ আমরা জানবো ‘কাশী ধাম’ শব্দটির অর্থ, এর তাৎপর্য, এর সাথে জড়িত কিছু আকর্ষণীয় তথ্য।
কাশী ধাম শব্দের অর্থ কি?
কাশী ধাম – দুটি শব্দের সুন্দর সমন্বয়। ‘কাশী’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘কাশ’ ধাতু থেকে যার অর্থ ‘আলোকিত করা’, ‘প্রকাশ করা’। অন্যদিকে ‘ধাম’ শব্দের অর্থ ‘নিবাস’, ‘পবিত্র স্থান’। অর্থাৎ কাশী ধাম হলো সেই পবিত্র স্থান যেখানে আধ্যাত্মিক জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হওয়া যায়।
কাশী ধাম: অন্যান্য নাম
কাশী ধাম বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন:
- বারাণসী (Varanasi): বরুণা ও অসি নদীর মধ্যবর্তী স্থান বলে ‘বারাণসী’।
- বেণারস (Benares): ব্রিটিশ শাসনামলে ‘বারাণসী’ নামটি পরিবর্তিত হয়ে ‘বেণারস’ হয়।
- অবমুক্ত ক্ষেত্র: হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, এখানে মৃত্যু হলে মুক্তিলাভ হয়।
কাশী ধামের তাৎপর্য
হিন্দু ধর্মে কাশী ধামের এক বিশেষ স্থান। কথিত আছে, ভগবান শিব এই শহর তৈরি করেছিলেন। এখানে গঙ্গা নদীর তীরে অসংখ্য ঘাট, মন্দির, এবং আধ্যাত্মিক স্থান। প্রতি বছর লাখ লাখ তীর্থযাত্রী এখানে আসেন পুণ্য লাভের আশায়।
কাশী ধাম: কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- পঞ্চ ক্রোশী যাত্রা: কাশী ধামের চারপাশে পাঁচ কোশ (প্রায় ১৬ কিলোমিটার) জুড়ে একটি পবিত্র পরিধি । হিন্দু বিশ্বাস অনুসারে, এই পরিধি পরিক্রমা করলে অনেক পুণ্য লাভ হয়।
- কাশী বিশ্বনাথ মন্দির: ভগবান শিবের ১২ টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি । এটি কাশীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্দির।
- মণিকর্ণিকা ঘাট: বিশ্বের সবচেয়ে পবিত্র শ্মশান । এখানে চব্বিশ ঘন্টা শবদাহ করা হয়।
কাশী ধাম সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- “কাশী ছাড়া কে জানে কোথায় বাঁচে মানুষ?”: অর্থাৎ, কাশী ধাম এতটাই পবিত্র যে এখানে এসে মানুষ আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভ করে।
- “যার মরণ কাশীতে, তার মুক্তি নিশ্চিত”: কাশীতে মারা গেলে মোক্ষ লাভ হয় বলে হিন্দুদের বিশ্বাস।
কাশী ধাম কেবল একটি শহর নয়, এটি একটি অনুভূতি, একটি আবেগ। এই পবিত্র ভূমিতে পদার্পণ করলে মন প্রশান্ত হয়, আত্মা পবিত্র হয়।