‘কার্ষাপণ’— শব্দটি শুনতে যতটা না সোনার গয়নার মতো মনে হয়, তার চেয়ে বেশি মনে হয় কোনো প্রাচীন মুদ্রার নাম। আসলে দুটোই ঠিক। ‘কার্ষাপণ’ প্রাচীন ভারতের একটি ওজনের একক, যা পরবর্তীকালে মুদ্রার নাম হিসেবেও ব্যবহৃত হত। আজকের পোস্টে আমরা ‘কার্ষাপণ’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, ইতিহাস এবং আরও অনেক কিছু জানবো।
কার্ষাপণ শব্দের অর্থ কি?
‘কার্ষাপণ’ একটি তৎসম শব্দ যা ‘কর্ষ’ এবং ‘আপণ’ এই দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। ‘কর্ষ’ মানে একটি নির্দিষ্ট ওজন, যা আশি রতির সমান এবং ‘আপণ’ মানে বাজার। অর্থাৎ ‘কার্ষাপণ’ বলতে বোঝাত হতো এমন একটি মুদ্রা যার ওজন ছিল কর্ষ পরিমাণ।
প্রাচীন ভারতে, বিভিন্ন ধাতু যেমন সোনা, রূপা, তামা, সীসা ইত্যাদি দিয়ে কার্ষাপণ তৈরি হত। একটি কার্ষাপণে ষোলো পণ থাকতো এবং এক কাহনে থাকতো এক কার্ষাপণ।
কার্ষাপণ শব্দের সমার্থক শব্দ
কার্ষাপণ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হলো:
- পণ
- কাহন
- মুদ্রা
- টাকা
কার্ষাপণ শব্দের ব্যবহার
‘কার্ষাপণ’ শব্দটি বর্তমানে অচলিত হলেও, বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থ, পুরাণ, কাব্য ইত্যাদিতে এটি ব্যবহৃত হয়েছে। কিছু উদাহরণ:
- রামায়ণঃ “দশরথ রাজা রামকে অনেক কার্ষাপণ দিয়েছিলেন।”
- মহাভারতঃ “যুদ্ধে জয়ী হয়ে যুধিষ্ঠির অনেক কার্ষাপণ লাভ করেন।”
আরো কিছু তথ্য
- বাংলা উচ্চারণ: কার্শাপোন্
- পদের নাম: বিশেষ্য (Noun)
- ইংরেজি অনুবাদ: Karshapana (coin), weight of silver or gold
- শব্দটির সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বাংলা শব্দ: ধন, সোনা, রূপা, টঙ্ক
‘কার্ষাপণ’ শব্দটি শুধুই একটি মুদ্রার নাম নয়, বরং প্রাচীন ভারতের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক।