‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটির সাথে আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত। কিন্তু এই পরিচিত শব্দটি নিয়ে কতটা জানি আমরা? আজ আমরা জানবো ‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার, এবং এর সাথে জড়িত কিছু তথ্য।
কাবুলিওয়ালা শব্দের অর্থ কি?
সহজ ভাষায়, ‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দের অর্থ হলো কাবুল বা আফগানিস্তানের বাসিন্দা। ঐতিহ্যগতভাবে, বাংলায় ‘কাবুলিওয়ালা’ বলতে বোঝাতো যারা আফগানিস্তান থেকে এসে শুকনো ফল, বাদাম ইত্যাদি ঘরে ঘরে বিক্রি করত।
শব্দের উৎপত্তি
‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটি আসলে দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত: ‘কাবুলি’ এবং ‘ওয়ালা’। ‘কাবুলি’ অর্থ কাবুলের বাসিন্দা এবং ‘ওয়ালা’ অর্থ কোন কিছুর সাথে সম্পর্কিত। তবে ভাষাতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে, ‘কাবুলি’ শব্দটি নিজেই ‘কাবুলের বাসিন্দা’ বুঝায় বলে ‘ওয়ালা’ প্রত্যয়টি অতিরিক্ত।
রবীন্দ্রনাথ এবং কাবুলিওয়ালা
যদিও ব্যাকরণগত ভাবে ‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটি সম্পূর্ণ শুদ্ধ নয়, তবুও এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘কাবুলিওয়ালা’ গল্পের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে একটি বিশেষ স্থান তৈরি করে নিয়েছে। গল্পটি একজন কাবুলিওয়ালা এবং একটি ছোট মেয়ের মধ্যে অদ্ভুত বন্ধুত্বের গল্প বর্ণনা করে।
কাবুলিওয়ালা শব্দের সমার্থক শব্দ
- আফগান
- পাঠান
কাবুলিওয়ালা শব্দের ব্যবহার
বর্তমানে ‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটি কেবল আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয় না। কখনো কখনো এটি রূপক অর্থে ও ব্যবহৃত হয়, যেমন : “তুমি তো একটা কাবুলিওয়ালার মত কথা বলছো!” (অর্থাৎ, অন্য ভাষায় কথা বলছো)।
কাবুলিওয়ালা: একটি ঐতিহ্যের প্রতীক
যদিও আজ ‘কাবুলিওয়ালা’ আমাদের দেশে তার ঐতিহ্যবাহী বৃত্তি থেকে অনেকটাই বিলুপ্ত, তবুও ‘কাবুলিওয়ালা’ শব্দটি এখনও আমাদের ভাষা এবং সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই শব্দটি আমাদের মনে করে দেয় এক অতীত কালের কথা, যখন দেশ থেকে দেশান্তরে মানুষের আনাগোনা ছিল, ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল।