“ছেলেরা এই নিয়ে কানাঘুষাও কম করে না” – আবুল ফজলের লেখায় ব্যবহৃত ‘কানাঘুষা’ শব্দটি আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। কিন্তু এই শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং উৎস সম্পর্কে কতটা জানি আমরা? চলুন, আজ জেনে নেওয়া যাক ‘কানাঘুষা’ শব্দটি সম্পর্কে বিস্তারিত।
কানাঘুষা শব্দের অর্থ কি?
‘কানাঘুষা’ শব্দটি মূলত একটি বিশেষ্য পদ। বাংলা ভাষায় এই শব্দটির অর্থ হলো কানে কানে বলাবলি অথবা গোপনে বলাবলি। যখন কেউ অন্য কারো সাথে গোপনে কোনো কথা বলে, যা অন্য কেউ যেন না শুনতে পায়, তখন তাকে কানাঘুষা বলা হয়।
কানাঘুষা শব্দের উৎস
‘কানাঘুষা’ শব্দটির উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। মনে করা হয়, তৎসম বা সংস্কৃত ‘কর্ণ’ ও ‘ঘোষ’ এই দুটি শব্দ মিলে ‘কর্ণঘোষ’ শব্দটির সৃষ্টি হয়েছে। পরবর্তীতে তা রূপান্তরিত হয়ে ‘কানাঘোষ+আ=কানাঘোষা>কানাঘুষা’ এই আকার ধারণ করে। উল্লেখ্য, ‘ঘোষ’ শব্দের একটি অর্থ হলো ‘জনশ্রুতি’।
কানাঘুষা শব্দের সমার্থক শব্দ
কানাঘুষা শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ রয়েছে। যেমন:
- ফিসফিসানি
- গুঞ্জন
- রটনা
- চুচুগুঞ্জন
- গোপন কথা
কানাঘুষা শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্য এবং কথোপকথনে ‘কানাঘুষা’ শব্দটির ব্যবহার বহুল। নিচে কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া হলো:
- ছেলেরা নতুন কোচ নিয়ে কানাঘুষা করছিল।
- সারা গ্রামে এখন তাদের প্রেমের গুঞ্জন।
- অফিসে সবার অজান্তে তারা ফিসফিস করে কথা বলছিল।
কানাঘুষা শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- কানাঘুষার মরা গঙ্গায় ভেসে যায়। (যে সকল তথ্য গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়, সময়ের সাথে সাথে তা সকলের জানাজানি হয়ে যায়)
উপসংহার
‘কানাঘুষা’ শব্দটির মধ্য দিয়ে আমরা গোপনীয়তা, গুজব, রহস্য ইত্যাদি বিষয়ের এক অন্তর্নিহিত ধারণা পেয়ে থাকি। এই ধরণের শব্দ আমাদের ভাষাকে সমৃদ্ধ করে এবং বিভিন্ন অভিব্যক্তি প্রকাশে সাহায্য করে।