কাঠ! এ শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে শক্ত, ধাতু-নির্মিত জিনিসের বিপরীতে, গাছের সেই শক্ত অংশ যা দিয়ে তৈরি হয় আসবাবপত্র থেকে শুরু করে নানান জিনিসপত্র। কিন্তু শুধু কি তাই? বাংলা ভাষায় ‘কাঠ’ শব্দটির ব্যবহার কেবল গাছের অংশকে নির্দেশ করে না, বরং এর রয়েছে নানান রূপক ও আলংকারিক অর্থ। আজ আমরা জেনে নেব ‘কাঠ’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে জড়িয়ে থাকা নানান প্রবাদ-প্রবচন।
কাঠ শব্দের অর্থ
বিশেষ্য রূপে:
- কাষ্ঠ; গাছের কাণ্ড ও শাখার শক্ত অংশ।
- (আলংকারিক) কঙ্কাল; হাড় (“দেহে কাঠ ছাড়া আর আছে কি!”)।
বিশেষণ রূপে:
- কাঠের মতো অনড় ও স্পন্দনশূন্য (“আমরা ভয়ে কাঠ হইয়া রহিলাম” – সুকুমার রায়)।
- রসশূন্য (“শুকিয়ে কাঠ হওয়া”)।
- শক্ত; অসাড় (“মরে কাঠ হওয়া”)।
- নিস্তব্ধ; অবাক (“নারায়ণী কাঠ হইয়া দাঁড়াইয়া রহিলেন” – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)।
কাঠ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ
‘কাঠ’-এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল ‘wood’।
কাঠ শব্দের ব্যবহার
বাংলা ভাষায় ‘কাঠ’ শব্দটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাক্য গঠন করা যায়। যেমন:
- আজ বাজার থেকে কিছু কাঠ কিনে আনতে হবে।
- ভয়ে আমার গলা কাঠ হয়ে গেল।
- সে মিথ্যা কথা বলে কিন্তু আমি কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সব বলবো।
কাঠ শব্দটির সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বাংলা শব্দ
কাঠ শব্দটি ব্যবহার করে আরও অনেক শব্দ গঠন করা হয়। যেমন: কাঠখড়ি, কাঠঠোকরা, কাঠবিড়ালি, কাঠগোলাপ, কাঠফাটা, কাঠমল্লিকা ইত্যাদি।
কাঠ শব্দটির সাথে প্রবাদ-প্রবচন
বাংলা ভাষায় ‘কাঠ’ শব্দটি ব্যবহার করে অনেক প্রবাদ-প্রবচন রয়েছে। যেমন:
- কাঠের চাষ হয় না।
- কাঠ কাটা মানুষ কাঠেই ভেসে যায়।
- কাঠ খড় পুড়িয়ে হলেও কাজ টা সেরে ফেলতে হবে।
‘কাঠ’ শব্দটি যদিও একটি সাধারণ শব্দ, তবুও এই শব্দটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করেছে।