‘কাওয়াজ’ শব্দটি শুনলেই আমাদের মনে সুশৃঙ্খল সৈন্যদের মার্চিং, তাদের অস্ত্র চালনার তালে তালে শব্দ, এবং যুদ্ধের প্রস্তুতির দৃশ্য ভেসে ওঠে। কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন এই শব্দটির আসল অর্থ কী, এর উৎপত্তি কোথা থেকে, কিভাবে এটি আমাদের ভাষায় এসেছে? আজ আমরা এই ‘কাওয়াজ’ শব্দটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
কাওয়াজ শব্দের অর্থ কি?
বাংলা ভাষায় ‘কাওয়াজ’ শব্দটি একটি বিশেষ্য পদ। এর অর্থ হলো সৈন্যদের যুদ্ধকৌশল শিক্ষা। অন্যভাবে বলতে গেলে, যুদ্ধের জন্য সৈন্যদের শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত করার প্রক্রিয়াকে ‘কাওয়াজ’ বলা হয়।
কাওয়াজ শব্দের উৎপত্তি
‘কাওয়াজ’ শব্দটি মূলত ফারসি ও আরবি ভাষার সংমিশ্রণে তৈরি। ফারসি ‘কোচ’ (যার অর্থ কুচকাওয়াজ) এবং আরবি ‘করা’ (যার অর্থ ইদ) এই দুটি শব্দ মিলে ‘কুচকাওয়াজ’ তৈরি হয়েছে। পরবর্তীতে ‘আওয়াজ’ শব্দের প্রভাবে ‘কুচকাওয়াজ’ থেকে ‘কাওয়াজ’ শব্দটির উৎপত্তি।
কাওয়াজ শব্দের সমার্থক শব্দ
- কুচকাওয়াজ
- অভ্যাস
- প্রশিক্ষণ
- ব্যায়াম
- ড্রিল
কাওয়াজ শব্দের ব্যবহার
‘কাওয়াজ’ শব্দটি সাধারণত সৈন্যদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলেও, বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ দেখা যায়।
- সৈনিক প্রশিক্ষণ: “সৈন্যরা প্রতিদিন সকালে কঠোর কাওয়াজ করে।”
- খেলাধুলা: “ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়েরা মাঠে নামার আগে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাওয়াজ করে।”
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: “বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের শৃঙ্খলাবোধ বাড়াতে নিয়মিত কাওয়াজ করানো হয়।”
কাওয়াজ শব্দটির সাথে সম্পর্কিত কিছু প্রবাদ-প্রবচন
- যত কাওয়াজ তত সাওয়াব। (অর্থাৎ যত বেশি প্র্যাকটিস, তত বেশি পারদর্শিতা)
‘কাওয়াজ’ শব্দটি আমাদের ভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি শুধু একটি শব্দ নয়, বরং একটি ঐতিহ্য, একটি সংস্কৃতির প্রতীক।