‘কল্যাণীয়েষু’ – শব্দটি শুনেই যেন একটা প্রাচীন আমলের ছবি ভেসে ওঠে। হলুদ আলোয় আলোকিত ঘরে কালির কলম হাতে চিঠি লিখছেন কোন বয়োজ্যেষ্ঠ। হ্যাঁ, বাংলা ভাষায় একসময় সম্বোধন ব্যবহারের ধরণ ছিল অনেক বেশি সুনির্দিষ্ট ও নিয়মতান্ত্রিক। ‘কল্যাণীয়েষু’ তেমনই এক সম্বোধন, যা ব্যবহৃত হত বয়ঃকনিষ্ঠের প্রতি।
কল্যাণীয়েষু শব্দের অর্থ কি?
‘কল্যাণীয়েষু’ শব্দটি মূলত দুটি অংশ নিয়ে গঠিত: ‘কল্যাণ’ এবং ‘ঈয়ষু’। ‘কল্যাণ’ অর্থ মঙ্গল, শুভ, কল্যাণ। ‘ঈয়ষু’ হল সপ্তমী বিভক্তির বহুবচন যা ‘এঁদের’ অর্থ প্রকাশ করে। সুতরাং, ‘কল্যাণীয়েষু’ এর আক্ষরিক অর্থ হল – “যাদের কল্যাণ হউক তাদের”।
কল্যাণীয়েষু শব্দের ব্যবহার
প্রাচীনকালে, বিশেষ করে চিঠিপত্রে ‘কল্যাণীয়েষু’ শব্দটি সম্বোধন হিসেবে ব্যবহার করা হত। বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা যখন তাদের কনিষ্ঠদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখতেন, তখন এই শব্দটি দিয়ে সম্বোধন করতেন। এটি ছিল শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতার প্রতীক।
কিছু বিশেষ তথ্য
- উচ্চারণ: কল্ল্যানিয়েষু (Kollaniyeshu)
- পদের নাম: সম্বোধন পদ (Vocative Case)
- স্ত্রীলিঙ্গ: কল্যাণীয়াষু
কল্যাণীয়েষু শব্দের সমার্থক শব্দ
‘কল্যাণীয়েষু’ শব্দের মতো অন্যান্য কিছু সম্বোধন শব্দ ছিল যেমন:
- প্রিয়
- স্নেহাস্পদ
- বৎস
- আদরের
বর্তমানে ‘কল্যাণীয়েষু’-র মত প্রাচীন এসব সম্বোধন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় না। তবে এগুলো আমাদের ভাষার ধ্রুপদী ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।