বাংলা ভাষার বিশাল জগতে প্রতিটি শব্দের রয়েছে অনন্য ইতিহাস এবং ব্যবহার। এরকমই একটি শব্দ হল “কলিকা”। প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন অর্থে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আজ আমরা “কলিকা” শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানার চেষ্টা করব।
কলিকা শব্দের অর্থ
“কলিকা” শব্দটি মূলত সংস্কৃত “কলিক” থেকে এসেছে। বাংলায় এই শব্দের দুটি প্রধান অর্থ পাওয়া যায়:
- কুঁড়ি: ফুল ফোটার পূর্বের ক্ষুদ্র অবস্থাকে কলিকা বলা হয়। কবি নজরুল ইসলাম তাঁর কবিতায় লেখেছেন: “ক্ষণে ক্ষণে … পিঙ্গল বরণ।
… কলিজা জিনি রাতুল নয়ন-সৈয়দ আলাওল”। এখানে “কলিকা” শব্দটি দিয়ে নবীন যুবতীদের কোমল সৌন্দর্যের ইঙ্গিত করা হয়েছে। - কল্কে ফুল: এক প্রকারের ছোট সাদা ফুলকে কলিকা বলা হয়।
কলিকা শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্যে, কবিতায়, গানে এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও “কলিকা” শব্দটির ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। কিছু উদাহরণ:
- কবিতা: “কলি কালের কলিকা” (জীবনানন্দ দাশ)
- গান: “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, চির সবুজ তোমার ধরা, তোমার আকাশে – বাতাসে – পাখির গানে কলিকা হাসে।”
- দৈনন্দিন জীবন: “গাছে নতুন নতুন কলিকা এসেছে।”
কলিকা শব্দের সাথে সম্পর্কিত কিছু তথ্য
- পদের নাম: বিশেষ্য
- বাংলা উচ্চারণ: kô-li-ka
- ইংরেজি অর্থ: bud, a type of small white flower
- সমার্থক শব্দ: কুঁড়ি, মুকুল, ফুলকলি
পরিশেষে বলা যায়, “কলিকা” শব্দটি শুধু একটি শব্দ নয়, এটি বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই শব্দটির মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির সৌন্দর্য, নব জীবনের প্রতীক এবং আমাদের ভাষার সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের পরিচয় পাই।