সোনালি রঙের ফুলে যে গাছটি আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয়, সেই গাছ এবং ফুলকে আমরা চিনি ‘কর্ণিকার’ নামে। কিন্তু ‘কর্ণিকার’ শুধুই কি একটি নাম? এই শব্দটির পেছনে লুকিয়ে আছে ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং ভাষার অপূর্ব সমাহার। আজ আমরা খুঁজে দেখবো ‘কর্ণিকার’ শব্দটির অর্থ, ব্যবহার এবং এর সাথে জড়িয়ে থাকা রোমাঞ্চকর সব তথ্য।
কর্ণিকার শব্দের অর্থ
‘কর্ণিকার’ একটি তৎসম শব্দ যার উৎপত্তি সংস্কৃত ভাষা থেকে। ‘কর্ণিকা’ শব্দের সাথে ‘ঋ’ এবং ‘অ’ প্রত্যয় যোগে ‘কর্ণিকার’ শব্দটি গঠিত হয়েছে। এই ‘কর্ণিকা’ শব্দের অর্থ হল কানের ফুল অথবা কানের দুল, যা এই ফুলের আকৃতির সাথে মিল। আবার কর্ণিকার শব্দটি সোঁদাল গাছ অথবা সোঁদাল (সোনালু) ফুলকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
কর্ণিকার শব্দের সমার্থক শব্দ
- সোঁদাল
- সোনালু
- কনক
- অর্জুন
কর্ণিকার শব্দের ব্যবহার
বাংলা সাহিত্যে ‘কর্ণিকার’ শব্দটি বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাসে প্রকৃতির সৌন্দর্য বর্ণনায় এই শব্দটি বিশেষ স্থান পেয়েছে।
কর্ণিকার ফুলের উজ্জ্বল হলুদ রঙ এবং এর সৌন্দর্য মানুষকে মুগ্ধ করে। তাই এই ফুলের প্রতি মানুষের আবেগ, ভালোবাসা প্রকাশের জন্য কর্ণিকার শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
কিছু উদাহরণঃ
- “অনাবিল শুভ্রতার কোলে ফুটে উঠল সোনার ফুলে সাজানো একটি মাত্র কর্ণিকার” – অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- “কর্ণিকার ফোটে, বসন্ত এসেছে ফিরে, পাগল করে মোরে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কর্ণিকার শব্দ সম্পর্কিত কিছু তথ্য
- বাংলা উচ্চারণ: কোর্নিকার
- পদের নাম: বিশেষ্য (Noun)
- বাংলা অর্থ: সোঁদাল গাছ অথবা সোঁদাল (সোনালু) ফুল
- ইংরেজি অর্থ: Indian trumpet flower, Tree Jasmine
‘কর্ণিকার’ শব্দটি শুধু একটি ফুলের নাম নয়, এটি আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির একটি অংশ। এই শব্দটির মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির প্রতি আমাদের ভালোবাসা, আবেগ প্রকাশ করে থাকি।