বাংলা ভাষার একটি সুন্দর ও অর্থবহনকারী শব্দ হল “কম্বু”। শব্দটি প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। মূলত, “কম্বু” শব্দটি “শাঁখ” বা “শঙ্খ” বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
কম্বু শব্দের অর্থ
“কম্বু” শব্দটি বিশেষ্য পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং এর অর্থ “শাঁখ” ।
উদাহরণস্বরূপ, “মনোহর কন্ঠ দেখি কম্বু হৈল মনোদুঃখী, জলমধ্যে করিল প্রবেশ।” (দৌলত উজির বাহরাম খান) – এই পঙক্তিতে “কম্বু” শব্দটি “শাঁখ” অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
কম্বু শব্দের সমার্থক শব্দ
“কম্বু” শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ হল:
- শাঁখ
- শঙ্খ
- পাঞ্চজন্য
কম্বু শব্দের ব্যবহার
“কম্বু” শব্দটি বিভিন্নভাবে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হয়।
কম্বু শব্দ দিয়ে গঠিত কিছু শব্দ:
- **কম্বুকন্ঠ:** (বিশেষ্য)
- যে কন্ঠ শঙ্খের ন্যায় রেখাযুক্ত।
- যে কন্ঠধ্বনি শঙ্খধ্বনির ন্যায় প্রবল ও গম্ভীর।
(বিশেষণ)
- শঙ্খের ন্যায় রেখাযু্ক্ত কন্ঠধারী।
- শঙ্খের ন্যায় উচ্চ ও গভীর কন্ঠ ধ্বনিবিশিষ্ট।
- **কম্বুকন্ঠী:** (বিশেষণ) (স্ত্রীলিঙ্গ) শঙ্খের ন্যায় রেখাবিশিষ্ট কন্ঠধারিণী।
- **কম্বুগ্রীবঃ** (বিশেষণ) শঙ্খের মতো রেখাযুক্ত গ্রীবাধারী।
- **কম্বুগ্রীবা:** (বিশেষ্য) যে গ্রীবা শঙ্খের মতো রেখাবিশিষ্ট।
- **কম্বুনিনাদ:** (বিশেষ্য) শঙ্খের সুগম্ভীর ধ্বনি; শঙ্খের বির্ঘোষ।
- **কম্বুবর:** (বিশেষণ) শঙ্খশ্রেষ্ঠ; উত্তম শঙ্খ (কম্বুবর নিন্দিয়া কন্ঠের পরিপাটি- সৈয়দ আলাওল)।
- **কম্বুরেখা:** (বিশেষ্য) শঙ্খদেহের রেখা (তাঁর জটিলতার আড়ালে হেগেলী উৎক্রান্তির কম্বুরেখা ধরা পড়ত না-সুধীন্দ্রনাথ দত্ত)।
কিছু বাক্যে “কম্বু” শব্দের ব্যবহার:
- পুজোর সময় মন্দিরে কম্বু বাজানো হয়।
- তার কম্বুকন্ঠী কণ্ঠস্বর সকলকে মুগ্ধ করে।
- সৈনিকরা যুদ্ধক্ষেত্রে কম্বুনিনাদ করে অগ্রসর হত।
উপসংহারে বলা যায়, “কম্বু” শুধু একটি শব্দ নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।