‘কচলানো’! শব্দটি শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে নানান চিত্র। হতে পারে তা মায়ের হাতের কচলানো ভাত, আবার হতে পারে কাপড় কাচার সময় সাবানের গুঁড়ো কচলানোর দৃশ্য। আসলে বাংলা ভাষার একটি মনোরম শব্দ এই ‘কচলানো’। চলুন আজ জেনে নেই এই শব্দটি সম্পর্কে বিস্তারিত।
কচলানো শব্দের অর্থ কি?
কচলানো একটি ক্রিয়াপদ। এর অর্থ হলো হাত দিয়ে বারবার ঘষা বা রগড়ানো। যেমন: “ঘুম থেকে উঠে ছোট্ট শিশুটি চোখ দুটো কচলাচ্ছিলো।”
কচলানো শব্দের বিভিন্ন অর্থ
কেবল রগড়ানো অর্থেই নয়, ‘কচলানো’ শব্দটি আরও কিছু অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন:
- চটকানো: “খাবার খাওয়ার সময় পোশাকে দাগ লেগে যাওয়ায় মা রাগ করে বললেন, ‘কতবার বলেছি ভালো করে খেতে, দেখ এবার কাপড়টা কচলালি!’”
- উত্তমরূপে মাখা: “রান্না করার সময় মসলা কষানোর পর দিদা বললেন, ‘এবার একটু জল দিয়ে মসলাটা ভালো করে কচলিয়ে নে।’”
- বিশেষভাবে রগড়িয়ে ধোয়া; প্রক্ষালন করা: “কাপড় ধোয়ার সময় দাগযুক্ত জায়গাগুলোতে সাবান কচলিয়ে নিতে হয়।”
কচলানো শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ
ইংরেজিতে ‘কচলানো’ শব্দটির অনেকগুলো প্রতিশব্দ রয়েছে। কিছু প্রতিশব্দ হলো:
- Rub
- Scrub
- Scour
- Massage
- Knead
কচলানো শব্দের সমার্থক শব্দ
বাংলায় ‘কচলানো’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ রয়েছে। যেমন:
- ঘষা
- রগড়ানো
- মালিশ করা
- চটকানো
- মাখানো
কচলানো শব্দের ব্যবহার
‘কচলানো’ শব্দটি আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানানভাবে ব্যবহার করে থাকি।
কিছু উদাহরণ:
- ঘুম থেকে উঠে অনেকেই চোখ কচলায়।
- মাথাব্যথার সময় অনেকে মাথায় তেল কচলিয়ে মালিশ করে।
- রান্না করার সময় মা মাছের গায়ে হলুদ ও লবণ কচলিয়ে দেন।
কচলানো শব্দ ব্যবহার করে কিছু প্রবাদ-প্রবচন
শুধু দৈনন্দিন জীবনেই নয়, ‘কচলানো’ শব্দটি আমাদের ভাষার অনেক প্রবাদ-প্রবচনেও স্থান পেয়েছে। যেমন:
- খালি কলসি বেশ কচলায়: এই প্রবাদটি দ্বারা বোঝানো হয় যারা অজ্ঞ তারাই বেশি বোল্টাস করে।
পরিশেষে বলতে হয়, ‘কচলানো’ শব্দটি ছোট্ট হলেও এর বহুবিধ অর্থ ও ব্যবহার আমাদের ভাষাকে করে তুলেছে আরও সমৃদ্ধ।